উৎসব লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
উৎসব লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
আজ পশ্চিমবঙ্গে নববর্ষ

আজ পশ্চিমবঙ্গে নববর্ষ


আজ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বাংলা নববর্ষ। আজ সেখানে স্বাগত ১৪২১। জীর্ণ সবকিছুকে সরিয়ে নতুনকে বরণ করে নিচ্ছেন সে রাজ্যের মানুষ। নববর্ষে ২৪ ঘন্টার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,আজকের সকালটা বাঙালির কাছে একেবারে অন্যরকম। নতুন করে সব কিছু শুরু করার একটা দিন। বাঙালির কাছে আজকের দিনটা শুধু কেলেন্ডারের পাতা ওল্টানোর জন্য নয়। সকাল থেকেই দক্ষিণেশ্বর, কালীঘাট সহ বিভিন্ন মন্দিরে পুজো দিতে ভিড় করেছেন মানুষ। বেলা বাড়তেই দোকানে দোকানে শুরু হল হালখাতার উদ্বোধন। চলছে মিষ্টি মুখের পালা। শার্ট-প্যান্টের বদলে পাঞ্জাবি পরা মানুষের সংখ্যাই বেশি নজরে পড়ছে। ভোটের উত্তাপের মাঝে বাঙালির আজ সত্যিকারের বাঙালি হওয়ার দিন। বিশ্বায়নের ঢেউকে উল্টো পিঠে নিয়ে বাঙালি হওয়ার স্রোতে ভেসে যাওয়ার দিন। ময়দানেও নতুন বছরে চলছে বারপুজোর পালা। নববর্ষ উপলক্ষে আনন্দবাজার পত্রিকায় ছাপা এক প্রবন্ধে বলা হয়েছে,"বাংলা নববর্ষে জড়িয়ে যাচ্ছে জাতিপরিচয়ের সুতীব্র অহংকার। একটি বিশেষ ভাষার মানুষের জাতীয় সংস্কৃতি বলে যাকে দাবি করছি, তা হল অনেক মানুষের, একাধিক জাতির মানুষের।এ পার বাংলায় পয়লা বৈশাখ উদযাপনে যে-ভাবে বাণিজ্যিক সম্ভোগ রয়েছে, ওপার বাংলায় সেই ভাবে রয়েছে সাংস্কৃতিক উপভোগ। অন্তত গুগল ইমেজে পয়লা বৈশাখের ছবি অনুসন্ধান করতে গেলে সেই বিষয়টায় চোখে পড়ে। কিন্তু এই দুই পারের মধ্যে বিস্তর ফারাক। বাংলাদেশ এমন একটি দেশ, যার জন্ম একটি বড় ক্রাইসিস থেকে, সেই প্রেক্ষিত মাথায় রাখলে সেই দেশের নিজস্ব আইডেন্টিটি তৈরি করার প্রয়োজনীয়তা ও সে দিক থেকে জাতীয় সংস্কৃতি বলে কিছু উপস্থাপন করা বেশ প্রয়োজনীয় হয়ে ওঠে। কিন্তু ধীরে ধীরে সেই দেশও তার জাতীয় সংস্কৃতি উদযাপনে যদি মুক্তমনা না হয় ও মুক্ত অঙ্গন নির্মাণ না করে, তা হলে অদূর ভবিষ্যতে আদিবাসিন্দাদের দিক থেকে সাংস্কৃতিক বিরোধ আসতেই পারে। যেহেতু সেই দেশে নিশ্চিত ভাবেই পয়লা বৈশাখের মতো অনুষ্ঠান জাতীয়তাবাদের ধারণার সঙ্গে সম্পৃক্ত।" বাংলাদেশের পয়লা বৈশাখ উদ্যাপনের অনুসরণে কলকাতাতেও আয়োজিত হতে চলেছে একটি বইমেলা, কলেজ স্কোয়ারে। যেখানে মানুষের কাছে আরও বেশি করে পৌঁছে দেওয়া হবে বাংলা বই এবং মানুষকে উৎসাহিত করা হবে বাংলা বইপাঠে।
ধুম চলেছে বৈশাখী কেনাকাটায়

ধুম চলেছে বৈশাখী কেনাকাটায়

বাঙালি জাতির অন্যতম উৎসব পহেলা বৈশাখের। বাংলা নববর্ষ ১৪২১-কে বরণ করে নিতে এরই মধ্যে নানা আয়োজনে মেতে উঠেছে দেশবাসী। কর্ম ব্যস্ততার শহর রাজধানীবাসীর মাঝেও নেমে এসেছে বর্ষবরণের আমেজ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রার সকল আয়োজন চলছে ধুম গতিতে। গত এক সপ্তাহ থেকেই বৈশাখী সাজে সেজে রয়েছে রাজধানীর মার্কেটগুলো।
বাংলা সংস্কৃতির অন্যতম উৎসব পহেলা বৈশাখ। বৈশাখের ছোঁয়া লেগেছে নগরের বিপনীবিতানগুলোয়ও। উৎসব প্রিয় তরুণ-তরুণীসহ বিভিন্ন বয়সীদের পদচারণায় মুখরিত বিপনীবিতানগুলো। বৈশাখে নিজেকে একটু ভিন্ন আঙ্গিকে সাজাতে কেনাকাটা সাড়তে ভিড়ছেন সকল শ্রেণীর মানুষজন।
রাজধানীর নিউ মার্কেট, আজিজ সুপার মার্কেট, বসুন্ধরা সিটি, যমুনা ফিউচার পার্কসহ সকল শপিং মলগুলোতে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটায় রীতিমত ভিড় জমিয়েছে নগরবাসী। বিশেষ করে বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত ক্রেতা সমাগম থাকে চোখে পড়ার মতো।
বৈশাখে মেয়েদের লাল-সাদা শাড়ির পাশাপাশি রয়েছে নানা ডিজাইনের নজর কাড়া পোশাক। এছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বসেছে বাহারি চুড়ি-মালার পসরা। বাঙালি ললনারা বৈশাখের পোশাকের সাথে মিলিয়ে কিনছে রকমারি সব মালা, চুড়ি, কানের দুল, টিপ, চুলের ফিতাসহ সাজের নানা সামগ্রী।
চুড়ি মেলায় আসা আফসানা রাহমান জানান, “বৈশাখের শাড়ি কেনা শেষ, শাড়ির সাথে মিলিয়ে চুড়ি আর মালা কিনতে এসেছি। শপিং মলের আশে পাশেই চুড়ি-মালার দোকান বসায় কেনাকাটা অনেক সহজ হয়ে গেছে। দেশীয় ঐতিহ্যকে নিজের মধ্যে ধারণ করে বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নিতে কোন কিছুর অপূর্ণতা রাখতে চাই না।”
বৈশাখের রং লেগেছে ছেলেদের মনেও। পিছিয়ে নেই কেনাকাটায়ও। পছন্দের পাঞ্জাবি, ফতুয়া অথবা টি-শার্ট কিনে নিচ্ছেন বৈশাখকে বরণ করতে।
রাজধানীর ধানমণ্ডির সানরাইজ প্লাজায় বৈশাখের পোশাক কিনতে আসা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র সাইফ নাহিদ জানান, “বৈশাখকে কেন্দ্র করে অনেক রুচিশীল পোশাক এসেছে বাজারে। তবে ক্রেতাদের চাহিদা বেশি থাকায় পন্যের দাম ছাড়ছে না বিক্রেতারা। হাজার টাকার পাঞ্জারি বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ টাকায়। তবুও কিছু করার নেই, নববর্ষ বলে কথা, নতুন কাপড় চাই-ই-চাই।”
দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভাল থাকায় বেচাকেনা ভাল হচ্ছে বলে সন্তুষ্ট ব্যবসায়ীরাও। জমজমাট বেচা কেনা করছে পোশাক বিক্রেতারা। গেল বছরের শেষ দিকের হরতাল-অবরোধের ক্ষতি অনেকটাই পুষিয়ে যাবে বলে মনে করছেন পোশাক তারা।
রাপা প্লাজার একজন পোশাক ব্যবসায়ী জানান, “অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের বেচাকেনা ভাল। আর বর্তমানে দেশের পরিস্থিতি মোটামুটি ভাল থাকায় ক্রেতা সমাগম বেশি এবং আমরা বেশ আশাবাদী।”
এদিকে বৈশাখকে বরণ করে নিতে প্রতিবছর চারুকলা প্রাঙ্গণ থেকেই বের হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। আর এই মঙ্গল শোভাযাত্রাকে সফলের প্রস্তুতি নিতেই চারুকলায় এখন চলছে মহাযজ্ঞ। নবীন-প্রবীণ শিক্ষার্থীরা দিনরাত পরিশ্রম করছেন মঙ্গল শোভাযাত্রাকে সফল করতে। চারুকলার ফটকে পা রাখলেই মঙ্গল শোভাযাত্রার কর্মযজ্ঞ চোখে পড়বে।