দেশের খবর লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
দেশের খবর লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৪ নম্বর সতর্কতা সংকেত

সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৪ নম্বর সতর্কতা সংকেত

নিম্নচাপের কবলে পড়ে বঙ্গোপসাগরে ভাসছে ৪ মাঝিমাল্লা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৪ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। 
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সাথে তাদেরকে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটির প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগররে গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালার সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে।এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
শনিবার আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়।
পোশাক কারখানার চাকরি নারীদের বাল্য বিবাহ কমিয়েছে : গবেষণা তথ্য

পোশাক কারখানার চাকরি নারীদের বাল্য বিবাহ কমিয়েছে : গবেষণা তথ্য

Image result for garments in bangladesh
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের জীবন খুব একটা সুখের নয়। নানা সমস্যা নিয়ে তাদের জীবন অতিবাহিত করছেন। তবে এই চাকরি বাংলাদেশের নারী শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে এবং বাল্য বিবাহ হ্রাসে সহযোগিতা করছে বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে। ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটন-এর নতুন এ গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কারখানার চাকরি নারীদের জীবনমান উন্নয়নে সাহায্য করেছে, তাদেরকে আরো বেশি সময় স্কুলে থাকতে উৎসাহিত করছে আর সবচেয়ে বড় যে উপকারটি করছে, তা হচ্ছে- এই চাকরি মেয়েদের বাল্য বিবাহের হার হ্রাসে ও অল্প বয়সে মা হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করছে।
আমার ছেলেকে আমাকেই চিকিৎসা করতে দিন

আমার ছেলেকে আমাকেই চিকিৎসা করতে দিন

নারায়ণগঞ্জ:কোলে থাকা আড়াই বছরের শিশু শাফিনের গায়ে পেট্রল ঢেলে দেওয়ার কারণে আগুন ধরে যায়। জলন্ত অবস্থায় ছেলেকে নিয়ে বাসের জানালা দিয়ে নিচে লাফ দিই। ততক্ষণে আমার ছেলের শরীরের অনেকাংশ পুড়ে গেছে। আগুন দিবে ভালো কথা কিন্তু আমাদের জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যার এ কেমন চেষ্টা। আমার চিকিৎসা লাগবে না, আমার ছেলেকে আমাকেই চিকিৎসা করতে দিন।’

রোববার রাতে নারায়ণগঞ্জ শহরের ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নেওয়ার সময়ে এভাবেই চিৎকার করে কথাগুলো বলতে থাকেন ডা. শারমিন সিদ্দিকী।
সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগারের অস্তিত্ব এখন হুমকির মুখে

সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগারের অস্তিত্ব এখন হুমকির মুখে


প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি ও বিশ্ব সেরা ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনের অতন্দ্র প্রহরী রয়েল বেঙ্গল টাইগারের অস্তিত্ব আজ নানা কারনে আজ হুমকির মুখে পড়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন, লবনাক্ততা বৃদ্ধি, আবাসস্থল নষ্ট, খাদ্য সংকট, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, চোরা শিকারীদের তৎপরতা সহ মনুষ্য সৃষ্টি নানা জটিলতায় বিলুপ্ত হতে চলেছে বিশ্ব ঐতিহ্যের ধারক সুন্দরবনের ডোরাকাটা বাঘ। সর্বশেষ জরিপে সুন্দরবনের বাঘের সংখ্যা ৩৫০ থেকে ৫০০ বলে ধারণা করা হয়। বিশেষজ্ঞদের ধারনা পরোক্ষভাবে সুন্দরবনের নিয়ন্ত্রন বনদস্যু ও জলদস্যুদের হাতে চলে যাওয়ায় তাদের শিকার হয়েছে শতাধিক বাঘ। খাদ্য ও আবাসস্থল সংকটে দু’শতাধিক বাঘ পাড়ি জমিয়েছে সুন্দরবনের ভারতের অংশে। বাঘ সংরক্ষণে সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যায়ে বাংলাদেশ টাইগার অ্যাকশন প্ল্যান কার্যত কোনো কাজে আসেনি। দূর্নীতি হয়েছে প্রকল্পের কোটি কোটি টাকা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সুন্দরবনের উপর নানা হুমকি ও চোরা শিকারীদের কারনে বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশর বাঘ। জানাগেছে, ১৯০০ সালের দিকে বিশ্বে বাঘের সংখ্যা ছিল প্রায় ১ লাখ। বর্তমানে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৭ হাজারেরও কম। যার প্রায় অর্ধেক বাঘ রয়েছে ভারতে। সারা বিশ্বে বন উজাড় ও প্রতিনিয়ত চোরা শিকারীদের হাতে বাঘ হত্যার ফলে বর্তমানে প্রাণীটি মহাবিপন্ন প্রজাতি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। পৃথিবীর মাত্র ১৩ টি দেশে বাঘের অস্তিত্ব বিদ্যমান। বাংলাদেশ ছাড়া অন্যান্য দেশগুলো হচ্ছে, ভারত, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, চীন, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, লাওস, ভুটান, নেপাল ও রাশিয়া। বাঘ সমৃদ্ধ দেশগুলোকে নিয়ে গড়ে উঠেছে‘টাইগার রেঞ্জ কান্ট্রি’(টিআরসি)। বাঘ বিলুপ্তি রোধকল্পে এর অধ্যুষিত ও সংরক্ষণ বিষয়ে সহায়তাদানকারী দেশগুলো নিয়ে ১৯৯৪ সালের মার্চে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে আর্ন্তজাতিক সংস্থা গ্লোবাল টাইগার ফোরাম’(জিটিএফ) প্রতিষ্ঠিত হয়। বিশ্বব্যাপী বাঘ ও বাঘ সমৃদ্ধ বনাঞ্চলগুলো সংরক্ষণে সহায়তা দান করছে বিশ্বব্যাংক, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইউ,এস,এইড গ্লোবাল টাইগার ইনশিয়েটিভ (জিটিআই), জিআইজেড প্রভৃতি আন্তোর্জাতিক সংস্থা। টি আর এ এফ আই সি প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০০০ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে ১৩টি বাঘ সমৃদ্ধ দেশে ৬৫৪টি বাঘের চামড়া, দেহাবশেষ ও হাড় জব্দ করা হয়েছে। ধারণা করা হয় ঐ সময়ের মধ্যে ১ হাজার ৪২৫টি বাঘ মারা গেছে। ২০১০ সালের ২০-২৪ নভেম্বর রাশিয়ার সেন্ট পির্টার্সবার্গে‘টাইগার সামিট’ অনুষ্ঠিত হয়। এতে ঘোষণার মূল বিষয়গুলো ছিল আগামী ২০২২ সালে বাঘের আবাসস্থল হিসেবে চিহ্নিত বনাঞ্চলগুলোকে সর্বাধিক গুরুত্বের সঙ্গে সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা, বাঘের আবাসস্থালকে জীববৈচিত্র সংরক্ষণের মূল আধার হিসেবে চিহ্নিত করে কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ, বাঘ সমৃদ্ধ বনাঞ্চলে কোনো শিল্প কারখানা স্থাপন, খনিজ পদার্থ উত্তোলন বা পরিবেশ দূষণের মত কোনো কর্মকান্ড পরিচালনা না করা, বনাঞ্চলের চলমান টহল ব্যবস্থাকে উন্নত করে বাঘ ও বাঘের শিকার প্রাণীর নিধন বন্ধ করা, বাঘ সংরক্ষণে ব্যাপক গণসচেতনতা সৃষ্টি প্রভৃতি। বনের জীব-বৈচিত্র, খাদ্য শৃঙ্খল ও প্রতিবেশ চক্রের প্রধান নিয়ন্ত্রক বাঘ। বনের প্রাকৃতিক বংশ বৃদ্ধি যাতে ব্যাহত না হয় সে জন্য বাঘ তৃণভোজী প্রাণী যেমন, হরিণ, শূকর, বন গরু ইত্যাদি শিকার করে বনের প্রতিবেশ চক্রকে নিয়ন্ত্রন করে থাকে। বাঘ বন রক্ষায় অতন্দ্র প্রহরী এবং তার নির্দ্ধারিত আবাসস্থলে অন্য কোনো বাঘ বা মানুষের পদচারনা সহ্য করেনা। বাঘ একটি বনের জীববৈচিত্রের মাত্রা নিরুপনের নির্দেশক। যে বনের অবস্থা যত ভাল সেখানে বাঘের সংখ্যা ও তত বেশি থাকে। বাঘ কমে যাওয়ার অর্থ বনাঞ্চলের অবস্থা বা বাঘের আবাসস্থল বিরুপ পরিস্থিতির সম্মুখিন। তাই বাঘ সংরক্ষণ কেবল মাত্র একক প্রজাতি ব্যবস্থাপনা নয় এর সঙ্গে অন্যান্য উদ্ভিদ ও প্রাণীর জন্য প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রেখে তাদের বসবাস, খাদ্য নিরাপত্তা এবং প্রজনন নিয়ন্ত্রন করা। আর এ কারনেই মূলত মহাবিপদাপন্ন প্রজাপতির বাঘ রক্ষায় বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা স্বোচ্ছার হয়ে উঠেছে। ২০০৪ সালে ইউএনডিপি, বাংলাদেশ ও ভারতের বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় বাঘের পদ (পা) চিহ্নের ওপর ভিত্তি করে একটি জরিপ পরিচালিত হয়। সেই জরিপে সুন্দরবনের বাঘের সংখ্যা ছিল ৪৪০টি। এর মধ্যে পুরুষ বাঘ ১২১টি, মা বাঘিনী ২৯৮ টি ও বাচ্চা ২১ টি ছিল। পরিবেশবিদদের মতে ১৯৭৫ সালের পর সুন্দরবনে আর বাঘ বাড়েনি। বন বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত এক দশকে সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগে ২৪টি ও পূর্ব বিভাগে ১২টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে সাতক্ষীরা রেঞ্জের সবচেয়ে বেশী ১৪টি বাঘ গণপিটুনির শিকার হয়ে মারা গেছে। খুলনায় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের হিসেব অনুযায়ী ২০০২ পর্যন্ত বিভিন্ন ভাবে সুন্দরবনে ১২০টি বাঘ হত্যা করা হয়েছে। বনবিভাগের তথ্যানুযায়ী ১৯৮১-২০০৪ পর্যন্ত ৫৩টি বাঘ হত্যার শিকার হয়। ১৯৮১, ৮২, ৮৪, ৮৫, ৮৭ ও ১৯৯৫ সালে কোনো বাঘ মৃত্যুর শিকার হয়নি। ১৯৮৩ সারে ৩টি, ১৯৮৬ সালে ২টি, ১৯৮৮ সালে ১টি, ১৯৯০ সালে ২টি, ১৯৯১ সালে ৪টি, ১৯৯২ সালে ১টি, ১৯৯৩ সালে ৪টি ১৯৯৪ সালে ২টি, ১৯৯৬ সালে ৫টি, ১৯৯৭ সালে ৮টি, ১৯৯৮ সালে ২টি, ৯৯ সালে ৪টি, ২০০০ সালে ৫টি, ২০০১ সালে ১টি, ২০০২ সালে ৩টি, ২০০৪’সালে ৪টি, ২০০৫ সালে ৬টি, ২০০৭ সালে ৪টি, ২০১১ সালে ৪টি ও ২০১২ সালে ১টি বাঘ প্রাণ হারায়। স্থানীয়রা এর পেছনে ৮টি কারণ চিহ্নিত করেছে যার মধ্যে পাকৃতিক দুর্যোগ (ঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস), লবনাক্ততা বৃদ্ধি, খাদ্য সংকট, আবাস ধ্বংস ও চোরা শিকারিদের অপতৎপরতা। তবে প্রতি বছর প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও চোরা শিকারিদের হাতে নিহত বাঘের কোনো সঠিক পরিসংখ্যান জানা নেই কারো। ২০১২ সালের ১১জুন ঢাকার শ্যামলীর একটি বাড়ি থেকে র‌্যাব ৩টি বাঘের শাবক উদ্ধার করে। সূত্র জানায়, ঐ বছর জুনের প্রথম দিকে সুন্দরবনের সাতক্ষীরা এলাকা থেকে বাঘ পাচারকারী চক্র শাবক ৩টি তাদের মায়ের চোখকে ফাঁকি দিয়ে চুরি করে প্রথমে সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী গ্রামের এক ব্যক্তির মুরগীর ঘরে নিয়ে রাখে এরপর সেখান থেকে পাচার করা হয় ঢাকায়। এছাড়া কৈখালী ফরেস্ট অফিসের বন কর্মকর্তারা কৈখালী নদীর চর থেকে একটি মৃত বাঘ উদ্ধার করে। যার দাঁত, চামড়া, নখসহ বিভিন্ন অঙ্গ পাওয়া যায়নি। বনবিভাগ ও এলাকাবাসী জনায়, ১৯৯৮ সালের ২৬ মার্চ শ্যামনগরের দাতনিখালী গ্রামে একটি বাঘ ঢুকে পড়লে এলাকাবাসী বাঘটিকে গুলি করে হত্যা করে। এর একদিন পর একই এলাকায় আরো একটি বাঘ গণপিটুনিতে মারা যায়। ২০০৮ সালের ২০ জুন সন্ধ্যায় শ্যামনগরের দক্ষিণ কদম তলা গ্রামে একটি বাঘ প্রবেশ করে। এসময় তার আক্রমনে ১ গৃহবধূসহ ৩ জনের মৃত্যু হয়। আহত হয় আরো ২জন। এ ঘটনার পরের দিন এলাকাবাসী বাঘটিকে পিটিয়ে হত্যা করে। ২০০৯ সালের ২জুন সুন্দরবনের চুনা নদী পার হয়ে শ্যামনগরের খলিশাবুনিয়া গ্রামের কালীবাড়ী নামক স্থানে একটি বাঘ ঢুকে পড়ে। এতে ৩জন আহত হয়। ঘটনার প্রায় ১০ ঘন্টা পর গ্রামবাসী গলায় ফাঁস দিয়ে বাঘটিকে হত্যা করে। ২০১০ সালের জানুয়ারীতে একটি বাঘ লোকালয়ে প্রবেশ করে চন্ডিপুর গ্রামের খোরশেদ আলীর রান্না ঘরের চালের উপর অবস্থান নেয়। গ্রামবাসী বাঘটিকে ঘেরাও করে বনবিভাগ ও পুলিশের খবর দেয়। ১২ঘন্টা পর বনবিভাগ কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় গ্রামবাসী বাঘটিকে পিটিয়ে হত্যা করে। ২০১১ সালের ২৫ মার্চ শ্যামনগরের ভোলাখালী গ্রামে জনতায় গনপিটুনিতে মারা যায়। ২০১৩ সালের ২১ জুলাই কৈখালী এলাকায় এলাকাবাসী আরো একটি বাঘকে মৃত অবস্থায় দেখতে পায়। প্রতি বছর শীত মৌসুমে বাঘের আনাগোনা দেখা গেলেও এবার আর দেখা যায়নি। অথবা দীর্ঘ দিন হল মানুষের উপর বাঘের আক্রমন বা লোকালয়ে বাঘের অনুপ্রবেশর খবর পাওয়া যায়নি। এ থেকে ধারণা করা হচ্ছে সুন্দরবন থেকে রয়েল বেঙ্গল টাইগার বিলুপ্ত হতে চলেছে। নানা প্রতিকূলতায় অনেক বাঘ পাড়ি জমিয়েছে ভারতের অংশে। প্রসঙ্গত, পশ্চিম সুন্দরবনের মীরগাং, পার্শ্বেখালী, মুন্সিগঞ্জ, হরিনগরের কাঠ পাচারকারী চক্র প্রতিনিয়ত টেংরাখালী ও মীরগাং ফরেস্ট কর্মকর্তাদের নাকের ডগার উপর দিয়ে কাঠ পাচার করছে। কয়রা থেকে বনদস্যুরা জেলে সেজে কদমতলা অফিস থেকে পাশ পারমিট নিয়ে বনদস্যুদের অস্ত্রসহ বিভিন্ন সামগ্রী সরবরাহ করছে। এজন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছে সর্বশেষ বাঘ শুমারী। গত বছর সেপ্টেম্বরে সুন্দরবনে ৬০ টি ইনফ্লারেড ক্যামেরা ট্রাকিংয়ের মাধ্যমে ডোরা কাটা দাগ দেখে বাঘ শুমারীর আয়োজন করলেও তা শেষ পর্যন্ত থমকে যায় বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া তারা ভাটির সময় ছোট ছোট শাখা খালে বিষ প্রয়োগ করে মাছ নিধন করছে। ইতোপূর্বে সংঘবদ্ধ চক্রটি খুলনা রেঞ্জের নীলকোমল এলাকায় বিষ প্রয়োগ ও ফাঁসীতে হরিণ মারা সহ বনদস্যুদের সহযোগী হিসেবে কাজ করার দায়ে তাদের খুলনা রেঞ্জ থেকে বিতাড়িত করা হয়। সুন্দরবনের বাঘের দিকে লোলুপ দৃষ্টি পড়েছে আন্তর্জাতিক বাঘ শিকারী সিন্ডিকেটের। কয়েক বছর ধরে চক্রটি সুন্দরবনে বিষটোপ ও ফাঁদ পেতে ও গুলি করে বাঘ শিকার করে তার চামড়া, মাথা ও হাড়-গোড় পাচার করে চলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে প্রায় ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার আয়তনের সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশের আয়তন ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটারের মধ্যে বর্তমানে শতাধিক বাঘও নেই বলে স্থানীদের ভাষ্য। সরকার সুন্দরবন সংরক্ষণ ও সুরক্ষার জন্য বনে সব ধরণের সম্পাদ আহরণ নিষিদ্ধ’র পরিকল্পনা এমনকি সুন্দরবন সংরক্ষণ ও পর্যটকদের নিরাপত্তায় প্রশিক্ষিত ‘গাইড’ ছাড়া সুন্দরবন ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। তবে তা বাঘ রক্ষায় কতটা কার্যকর হবে তাই এখন দেখার বিষয়। প্রতি বছর ২৯ জুলাই আন্তর্জাতিক বাঘ দিবস পালিত হয়ে আসছে। তবে এবছর ঐ দিন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর থাকায় জাতীয় ভাবে ঘটাকরে পালন করা হয়নি আন্তর্জাতিক বাঘ দিবস। সুন্দরবন সংলগ্ন খুলনার কয়রা ও সাতক্ষীরার শ্যামনগরেও সরকারি বা বেসরকারি কোনো সংগঠন পালন করেনি বাঘ দিবস। বন ও পরিবেশ মন্ত্রনালয় থেকে ৭ আগস্ট বাঘ দিবস পালনের কথা জানানো হয়েছে।
প্রতি ৮ মিনিটে পাচার হচ্ছে একটি শিশু

প্রতি ৮ মিনিটে পাচার হচ্ছে একটি শিশু

 
ভারতে প্রতি ৮ মিনিটে পাচার হয়ে যায় একটি শিশু। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর বরাত দিয়ে মঙ্গলবার সে দেশের সংবাদ মাধ্যমগুলো এ খবর জানিয়েছে। ভারতে শিশু পাচার কোনো নতুন ঘটনা নয়। বরং প্রতিদিনই তা আশঙ্কাজন হারে বাড়ছে। এসব পাচারকারীদের হাতে পড়ে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে তাদের শৈশব। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারতে পাচারকৃত শিশুদের দশ শতাংশ বিদেশে পাঠানো হয়। বাকি ৯০ ভাগকে পাচার করা হয়ে থাকে এক রাজ্য থেকে আরেক রাজ্যে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট বলছে, প্রতি বছর ভারতে প্রায় চল্লিশ হাজার শিশু অপহৃত হয়। এদের মধ্যে ১১ হাজার শিশুরই কোনও খোঁজ মেলে না। বাড়ির নিরাপদ আশ্রয় থেকে পাচারচক্রের হাত ঘুরে এক অমানুষিক আর যন্ত্রণাময় জীবনে ঢুকে পড়ে তারা। পরে এদের মধ্যে কেউ শিশুশ্রমিক হিসেবে কাজ করে। অনেককে দিয়ে আবার রাস্তাঘাটে ভিক্ষেও করানো হয়। অঙ্গ-পাচারের মতো ভয়ঙ্কর চক্রেরও শিকার হয় বহু শিশু। তাদের শরীর থেকে অবাধে কিডনি বা অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কেটে বিক্রি করে দেওয়া হয়। এতে করে অনেকে মারাও যায়। এছাড়াও বহু শিশু বিক্রি হয়ে যায় যৌনপল্লীতে। তাদের জোর করে দেহব্যবসায় নামানো হয়। মূলত, দারিদ্রতার সুযোগ নিয়েই ফুলেফেঁপে উঠছে এ ধরনের শিশু পাচার চক্রগুলো। তারা আর্থিক দিক থেকে দুর্বল পরিবারগুলিকেই টার্গেট করছে। কখনও টাকার বিনিময়ে, কখনও বা উজ্জ্বল ভবিষ্যতের মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় এসব শিশুদের। ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক রিপোর্ট অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক সীমান্ত দিয়ে প্রতিবছর প্রায় ছয় লাখ থেকে আট লাখ বিশ হাজার মানুষ পাচার হয়ে যায়। যার মধ্যে পঞ্চাশ শতাংশই শিশু। এসবের মধ্যেই ভারত ক্রমে হয়ে উঠছে পাচারচক্রের কেন্দ্র। সাধারণত: অন্ধ্রপ্রদেশ, বিহার, কর্নাটক, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্রে ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যগুলোর শিশুদেরকেই এই অপরাধী চক্রটি টার্গেট করে থাকে।
ঠাকুরগাঁওয়ে ড.মুহাম্মদ শহীদ উজ-জামান নির্মাণ করলেন বাঁশের ‘কেল্লা’

ঠাকুরগাঁওয়ে ড.মুহাম্মদ শহীদ উজ-জামান নির্মাণ করলেন বাঁশের ‘কেল্লা’

ঠাকুরগাঁওয়ে ড.মুহাম্মদ শহীদ উজ-জামান নির্মাণ করলেন বাঁশের ‘কেল্লা’
ঠাকুরগাঁওয়ে ড.মুহাম্মদ শহীদ উজ-জামান নির্মাণ করলেন বাঁশের ‘কেল্লা’
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : বীরযোদ্ধা তিতুমীরের বাঁশের কেল্লা ইতিহাসে আজো অক্ষয় হয়ে আছে। বাঁশের কেল্লার সঙ্গে সঙ্গে বাঁশের স্থাপনাও এখন ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছে। এছাড়া ইট,চুন,সুরকির যুগে বাঁশের স্থাপনা তৈরীরও মননশীলতা প্রয়োজন। তারপরও প্রকৃতিপ্রেমী মানুষেরা ছুটে যেতে বার বার চায় প্রকৃতির কাছে।আরও অনুভূতি থেকেই ঠাকুরগাঁওয়ে বাঁশের মিলনায়তন নির্মাণ করলো উত্তরাঞ্চলের সূনামধন্য বে-সরকারি সংস্থা ইকো সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইএসডিও) এর নির্বাহী পরিচালক ও ঠাকুরগাঁওয়ের কৃতি সন্তান ড. মুহাম্মদ শহীদ-উজ-জামান।ঠাকুরগাঁওয়ে সংস্থার প্রধান কার্যালয়ের প্রশিক্ষণকেন্দ্রের ছাদে তৈরি করা হয়েছে বাঁশ দ্বারা নির্মিত স্থাপনাটি। নাম রাখা হয়েছে ‘চেতনা বিকাশ কেন্দ্র’।দুই হাজার স্কয়ার ফিটের মিলনায়তনটির চারপাশ বাঁশ দিয়ে নির্মাণ করা হলেও উপরে দেয়া হয়েছে খড়ের ছাউনি।ভেতরের আসবাব তৈরি করা হয়েছে বাঁশ ও পাট দিয়ে। বর্তমানে এ মিলনায়তনটি ব্যবহার করা হচ্ছে ইএসডিওর সম্মেলন কক্ষ হিসেবে। এ সম্মেলন কক্ষে আমন্ত্রিত অতিথিদের আপ্যায়নেও ব্যবহার করা হচ্ছে সব মাটির তৈরি জিনিসপত্র।সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ড. মুহাম্মদ শহীদ-উজ জামানের নির্দেশনায় ৮০ জন কারিগর ছয় মাস নিরলস পরিশ্রম করে নির্মাণ করেছেন বাঁশের মিলনায়তনটি।ড. মুহাম্মদ শহীদ-উজ-জামান এ প্রতিনিধিকে বলেন, গ্রামীণ ঐতিহ্য, বাঁশ ও মৃৎ শিল্পীদের কাজের প্রসার ঘটানোর জন্য বাঁশের মিলনায়তনটি নির্মাণ করেছি। বাঁশশিল্পীরা আগে বাঁশের বিভিন্ন প্রকার জিনিস তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করতা। কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন প্রকার প্লাস্টিক সামগ্রির ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় বাঁশশিল্পীরা দিন দিন বেকার হয়ে পড়েছে। মূলত তাদের কথা চিন্তা করেই বাঁশের মিলনায়তনটি নির্মাণ করা হয়েছে।’তিনি আরো বলেন, ‘ঢাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ঘরটির নকশা নিয়ে গেছে। আশা করি তারাও এমন ঘর নির্মাণ করবেন। এছাড়া কয়েকটি দেশের প্রতিনিধি ঘরটি দেখে মুগ্ধ হয়ে ঘরটির অংশবিশেষ তৈরির অর্ডার দিয়েছেন কারিগরদের।’তিনি আরো বলেন, বাঁশ চাষ অত্যান্ত লাভজনক। বাঁশ যে কোনো পতিত জমিতে চাষ করা যায়, বিশেষ করে গোরস্তানে। কারণ বাঁশের শিকড় খুবই চিকন। গোরস্তানে যেহেতু কোনো ফসল চাষ করা যায় না বা হয় না, সেহেতু বাঁশ চাষ করলে যেমন এ শিল্পের প্রসার ঘটিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যাবে, ঠিক তেমনি পতিত জমির সঠিক ব্যবহারও করা হবে। আমরা উত্তরবঙ্গের অন্যতম বৃহৎ পীরগঞ্জ গোরস্তানে পরীক্ষামূলকভাবে বাঁশ চাষের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
লিজ বন্ধ হচ্ছে বিআরটিসি বাসের

লিজ বন্ধ হচ্ছে বিআরটিসি বাসের


রক্ষাণাবেক্ষণ ঠিকমতো হয়না বলে বিআরটিসি বাসের লিজ বন্ধ করার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বৃহস্পতিবার সকালে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সড়ক পরিবহনে জটিলতা নিরসন সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এ তথ্য দেন।
বৈঠকের পর যোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, লিজ দেওয়ার পর বিআরটিসি বাসের রক্ষাণাবেক্ষণ ঠিকমতো হয়না। এতে বেসরকারি মালিক পক্ষের সঙ্গে সমস্যা হচ্ছে। সে কারণে বিআরটিসি বাসের লিজ বন্ধ করার ব্যাপারে আমরা উদ্যোগ নিচ্ছি।
যোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, জেলা পর্যায়ে যদি নতুন বাসরুট চালু করতে হয়, সেক্ষেত্রে মালিক পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। বর্তমানে চালুকৃত রুটে যেন ওভারল্যাপিং না হয়, সে ব্যাপারে বিআরটিসি আগামী সপ্তাহে বৈঠক করে সমস্যা সমাধান করবে।
জেলা ও মালিক সমিতির সঙ্গে আলোচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান যোগাযোগ মন্ত্রী।
বৈঠকে নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান ও স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙা এবং সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মূল পদ্মাসেতু নির্মাণের কার্যাদেশ অনুমোদন

মূল পদ্মাসেতু নির্মাণের কার্যাদেশ অনুমোদন


বহুল আলোচিত পদ্মাসেতু নির্মাণ প্রকল্পে মূল সেতু নির্মাণের জন্য অবশেষে চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানিকে দেয়া কার্যাদেশ অনুমোদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সোমবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি। ওবায়দুল কাদের জানান, চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেডকে ওয়ার্কঅর্ডার বা কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। সোমবার প্রধানমন্ত্রী এ কার্যাদেশের অনুমোদন দিয়েছেন। এর আগে গত ২২ মে চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেডের পদ্মা সেতু নির্মাণের দরপত্র প্রস্তাব অনুমোদন দেয় সরকার। ২২ মে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। পদ্মাসেতু প্রকল্পের মূল সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় হবে ১২ হাজার ১৩৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে মোট ব্যয়ের ২৫ দশমিক ৬০ শতাংশ (৩ হাজার ১০৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা) দেশীয় অর্থে ও অবশিষ্ট ৭৪ দশমিক ৪০ শতাংশ (৯ হাজার ২৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা) বৈদেশিক মুদ্রায় (ডলারে) পরিশোধ করতে হবে। জানা গেছে, মূল পদ্মা সেতু নির্মাণে ১০টি প্রতিষ্ঠান প্রাক-যোগ্যতা বাছাই দরপত্রে অংশ নেয়। সেখান থেকে ৫টি প্রতিষ্ঠান প্রাথমিকভাবে যোগ্য বলে বিবেচিত হয়। পরে বিশ্বব্যাংক কালোতালিকাভুক্ত করায় চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন কোম্পানিকে বাতিল করা হয়। গত বছর ২৬ জুন চারটি প্রতিষ্ঠানের কাছে চূড়ান্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়। এতে তিনটি প্রতিষ্ঠান অংশ নিলে সবগুলোই কারিগরিভাবে যোগ্য বিবেচিত হয়। অপর দুই প্রতিষ্ঠান হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং সিএ্যান্ডটি কর্পোরেশন এবং ডেলিম-এলএ্যান্ডটি জেভি। তিন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে চায়না মেজর ব্রিজকে ঠিকাদার হিসেবে নিয়োগ দেয়ার সুপারিশ করা হয়।
পদ্মা সেতুর মূল অবকাঠামোতে ব্যায় হবে ১২ হাজার ১৩৩ কোটি টাকা

পদ্মা সেতুর মূল অবকাঠামোতে ব্যায় হবে ১২ হাজার ১৩৩ কোটি টাকা


পদ্মা সেতু প্রকল্পের মূল অবকাঠামো নির্মাণে ব্যয় হবে ১২ হাজার ১৩৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড-এর কাছ থেকে এ আর্থিক প্রস্তাব পাওয়া গেছে। মূল অবকাঠামো নির্মাণের আন্তর্জাতিক দরপত্রে অংশ নেয়া আরও তিন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এটি সর্বনিু দর। পাশাপাশি এ কাজের জন্য সরকার যে সম্ভাব্য ব্যয় নির্ধারণ করেছে তার তুলনায় ১২ দশমিক ৬২ শতাংশ কম ব্যয়ের প্রস্তাব পাওয়া গেছে চীনের এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে। আজ সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে পদ্মা সেতু প্রকল্পের মূল অবকাঠামো নির্মাণ কাজের বিষয়টি অনুমোদনের জন্য তোলা হবে। সূত্র মতে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে চুক্তির অ্যাওয়ার্ড প্রদানের দিন থেকে ১৪৬০ দিন বা ৪ বছরের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করতে হবে। এর জন্য সরকারকে পারফরম্যান্স সিকিউরিটি অর্থ দিতে হবে। এ অর্থের পরিমাণ এখনও নির্ধারণ করা হয়নি। তবে চুক্তি সমঝোতার আগেই আলোচনার মাধ্যমে এ অর্থের পরিমাণ নির্ধারণ করা হবে বলে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। সেতু নির্মাণের জন্য চীনের প্রতিষ্ঠানটিকে কাজ দেয়া হলে তাদের অর্থ প্রদান করা হবে দেশী ও বৈদেশিক মুদ্রায়। চুক্তি মূল্যের ২৫ দশমিক ৬০ শতাংশ দেশীয় টাকা এবং ৭৪ দশমিক ৪০ শতাংশ সরকারি খাত থেকে বৈদেশিক মুদ্রায় পরিশোধ করতে হবে। ব্রিজের সব ক্রয়, সংগ্রহ ও নির্মাণের চুক্তির প্রস্তাবটিতে সরকারের ক্রয়নীতি ২০০৮ (পিপিআর) এবং বিশ্বব্যাংকের নীতিমালা অনুসরণ করার শর্তারোপ করা হয়েছে। এদিকে চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে অগ্রিম অর্থ দেয়ার জন্য যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে আরও ৩২৭ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। সূত্র মতে, বিশ্বব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে ২০১০ সালে পদ্মা বহুমুখী প্রকল্পের মূল অবকাঠামো নির্মাণের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়। ৪২টি প্রতিষ্ঠান প্রি-কোয়ালিফিকেশন ডকুমেন্ট ক্রয় করে। এর মধ্যে ১০টি প্রতিষ্ঠান কাগজপত্র জমা দিয়ে দরপত্রে অংশ নেয়। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি যোগ্যতার মূল্যায়নের ভিত্তিতে চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লি. স্যামসাং সিঅ্যান্ডটি কর্র্পোরেশন, ডেইলিম-এলঅ্যান্ডটি জয়েন্ট ভেঞ্চার, ভিনসি-এইচসিসি জয়েন্ট ভেঞ্চার ও চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লি. প্রতিষ্ঠানের তালিকা বিশ্বব্যাংকের কাছে প্রদান করে। ২০১১ সালের ১ জুলাই বিশ্বব্যাংক প্রি-কোয়ালিফিকেশন প্রতিষ্ঠানের তালিকায় সম্মতি প্রদান করে। জানা গেছে, বিশ্বব্যাংকের কালো তালিকায় চায়না কমিউনিকেশন কনসালটেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের নাম থাকায় ওই পাঁচ প্রতিষ্ঠানের তালিকা থেকে এ প্রতিষ্ঠানের নাম বাদ দেয়া হয়। ফলে টিকে থাকে চারটি প্রতিষ্ঠান। এরপর দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি ও ডিটেল ডিজাইন কনসালটেন্ট মাউনসের (একোমো) চারটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কারিগরি দরপত্র আহ্বান করা হয়। এর মধ্যে ভিনসি-এইচসিসি জয়েন্ট ভেঞ্চার বাদে অপর তিনটি প্রতিষ্ঠান তাদের কারিগরি সক্ষমতার কাগজপত্র দাখিল করে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ওই তিন প্রতিষ্ঠানকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে চূড়ান্ত প্রস্তাব পাঠাতে বলে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি। অবশ্য এর জন্য সময়সীমা বাড়িয়ে ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়। চূড়ান্ত প্রস্তাব জমা দেয়ার জন্য নির্ধারিত সময়ের চেয়ে আর ১০ সপ্তাহ বেশি সময় চায় স্যামসাং সিঅ্যান্ডটি কর্পোরেশন এবং ১২ সপ্তাহ বেশি সময় চেয়েছে ডেইলিম-এলঅ্যান্ডটি জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানি। এ বিষয়ে ডিটেল ডিজাইন কনসালটেন্ট কোনো সময় বৃদ্ধি করেনি। সময়ের মধ্যে একমাত্র চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লি. তাদের চূড়ান্ত প্রস্তাব জমা দেয়। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি ও ডিটেল ডিজাইন কনসালটেন্ট যাবতীয় দলিলাদি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সর্বনিু দরদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে সুপারিশ করে। চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লি. পদ্মা সেতু প্রকল্পের মূল অবকাঠামো নির্মাণের জন্য তাদের দরপত্রে খরচের প্রস্তাব দিয়েছে ১২ হাজার ১৩৩ কোটি ৩৯ লাখ ৩০ হাজার ৬৮২ টাকা ১৫ পয়সা।
সূত্র: যুগান্তর
বিজেপি সরকার: ছিটমহলবাসীর মাঝে সংশয়

বিজেপি সরকার: ছিটমহলবাসীর মাঝে সংশয়


ভারতীয় লোকসভার ১৬তম নির্বাচনে বিজেপির জয় নিয়ে নানা হিসাব-নিকাশ শুরু করছেন লালমনিরহাটের ছিটমহলবাসী। ছিটমহল বিনিময় চুক্তি বাস্তবায়ন যখন কংগ্রেসের ঘোষণার অপেক্ষায় ঠিক তখনই রাষ্ট্রক্ষমতা থেকে ভারতের বৃহৎ এ দলটি ছিটকে পড়ায় সংশয় দেখা দিয়েছে দু’দেশের ছিটমহল বিনিময় চুক্তি নিয়ে। তাই এ চুক্তি বাস্তবায়নে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে ছিটমহলবাসীকে, দৈনিক মানবকন্ঠ পত্রিকায় এভাবেই ছিটমহলবাসীর যে সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে তা তুলে ধরেছে। ছিটমহলবাসী মনে করছেন, এ চুক্তি বাস্তবায়ন কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকলে যত সহজ হতো, বিজেপি ক্ষমতায় আসায় তত সহজ হবে না। কেউ কেউ বলছেন সহজেই বিজেপি ছিটমহল চুক্তিতে এগিয়ে আসবে না। এলেও আবার নতুন করে ভাবতে হবে, যা অনেক সময়ের ব্যাপার। আবার অনেকেই বলছেন ভিন্ন কথা, বিজেপি আগের অবস্থান থেকে নিজের স্বার্থে অনেকটা সরে আসবে। বিজেপি এ গণরায়ের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই তাদের পরিকল্পনায় ছিটমহল বিনিময় চুক্তি বাস্তবায়ন করবে। যে কারণে ছিটমহলের অনেকেই বিশ্বাস করেন, কংগ্রেস যেখানে এ চুক্তিতে ব্যর্থ হয়েছে, সেখানে বিজেপি এ চুক্তি বাস্তবায়ন করে রাজনৈতিক সফলতা ঘরে তুলবে। পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম আংগরপোতা বঙ্গেরবাড়ি এলাকার বাসিন্দা আমির হোসেন বলেন, পুরাতন সরকার যা পারেনি, নতুন সরকার তা করে জনগণের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে। আর তা না করলে কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে তফাৎ কি থাকল? ছিটমহল বিনিময় চুক্তি বাস্তবায়নে কংগ্রেস সরকার যতটা পথ এগিয়ে নিয়েছেন নতুন বিজেপি সরকার তা আন্তরিকতার সঙ্গে দ্রুত বাস্তবায়ন করে দু’দেশের ছিটমহলবাসীর মুখে হাসি ফুটাবেন এমনটাই প্রত্যাশা ছিটমহলবাসীর। উল্লেখ্য, ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশি ৫১টি ও বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতীয় ১১১টি ছিটমহল রয়েছে। ৫১টি ছিটমহলে জমির পরিমাণ ৭ হাজার ২১ একর, লোকসংখ্যা ৩৮ হাজারও বেশি। অন্যদিকে ১১১টি ছিটমহলে ১৭ হাজার ১ শত ৪৯ একর জমি, লোকসংখ্যা ৬৫ হাজারের বেশি রয়েছে।
পানি সঙ্কটে রাজধানীবাসী, যাও পাচ্ছে তাও ব্যবহারযোগ্য নয়

পানি সঙ্কটে রাজধানীবাসী, যাও পাচ্ছে তাও ব্যবহারযোগ্য নয়

 
তীব্র তাপদাহে রাজধানীসহ সারাদেশের জনজীবন যেন দুর্ভিসহ হয়ে ওঠেছে। সেই সাথে খোদ রাজধানীতে দেখা দিয়েছে পানির তীব্র সঙ্কট। যদিও বা পানি পাওয়া যায় তাও আবার ব্যবহারযোগ্য নয়। পানিতে রয়েছে দুর্গন্ধ, রঙ হলুদ, কোথাও কোথাও ময়লা পানির সঙ্গে আসছে পোকাও। জানা যায়, পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজার, দক্ষিণ মৈশুণ্ডী, যাত্রাবাড়ী ও নতুন ঢাকার রাজাবাজার, ফার্মগেট, মোহাম্মদপুর ও মিরপুরে ওয়াসার পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে সে পানি ব্যবহারযোগ্য নয়। পানিতে রয়েছে দুর্গন্ধ, রঙ হলুদ, কোথাও কোথাও ময়লা পানির সঙ্গে আসছে পোকা। প্রায় নয় মাস ধরে চলছে পানির এ কষ্ট। বিশেষ করে রান্না, গোসল, কাপড় ধোয়াসহ বিভিন্ন কাজে ভীষণ সমস্যায় পড়েছে ওইসব এলাকাবাসী। সম্প্রতি জনস্বাস্থ্য সংগ্রাম পরিষদ নামক একটি সংগঠন অভিযোগ করেছে, রাজধানীবাসীর জন্য ওয়াসার সরবরাহ করা পানি পানের অযোগ্য, জীবাণুযুক্ত ও দুর্গন্ধময়। জানা গেছে, বর্তমানে তীব্র গরমের কারণে পানির চাহিদা বেড়ে গেছে। এর ওপর লোডশেডিং, বিদ্যুৎ বিভ্রাট বেড়ে যাওয়ায় পাম্পগুলোয় পানি উত্তোলনেও সমস্যা হচ্ছে। গেণ্ডারিয়া থানার পাশে একটি পানির পাম্প বসানোর জন্য এলাকাবাসী ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর আবেদনপত্র দিয়েছে। তাতে স্থানীয় সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদেরও সুপারিশ রয়েছে। দক্ষিণ মৈশুণ্ডীতেও রয়েছে পানির কষ্ট। পানি সরবরাহ সেখানে মোটামুটি স্বাভাবিক থাকলেও পানিতে তীব্র দুর্গন্ধ। কল ছাড়লেই ভেসে ওঠে পোকা ও ময়লা। ওয়াসা সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালে ঢাকায় দৈনিক পানির চাহিদা ছিল ২৪৮ থেকে ২৫০ কোটি লিটার। এর বিপরীতে সরবরাহ করা হতো ২০০ কোটি লিটার। ওই সময় ৫০ কোটি লিটার পানির ঘাটতি ছিল। কিন্তু বর্তমানে পানির সে ঘাটতি পূরণ করেছে ঢাকা ওয়াসা। এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার পাম্পে পানিও কম উঠছে বলেও জানা যায়।
 সূত্র: আলোকিত বাংলাদেশ
বদলে যাচ্ছে ঢাকা

বদলে যাচ্ছে ঢাকা

যানজটমুক্ত করে ঢাকাকে অত্যাধুনিক রাজধানী হিসাবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। এর মূল লক্ষ্য, যানজটের পাশাপাশি জলাবদ্ধতা, নদী দূষণ, আবাসন সমস্যা, বিদ্যুত্-গ্যাস-পানি সংকট নিরসন করে ঢাকাকে নাগরিক সুবিধা সম্বলিত পরিচ্ছন্ন শহর হিসাবে গড়ে তোলা। এজন্য রাজধানীর ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার মাথায় রেখে নেয়া হয়েছে বহুমুখী প্রকল্প। এর সঙ্গে প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবেও ঢাকা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠার বিষয়টিও বিবেচনায় নেয়া হয়েছে।
ঢাকাকে বদলে দেয়ার মহাপরিকল্পনায় জানা গেছে, আসন্ন জুনের মধ্যে শুরু হচ্ছে বহুল প্রত্যাশিত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ। ঢাকার অন্যতম ব্যস্ত ও ভিআইপি সড়ক শাহবাগ-রূপসী বাংলা হোটেল (প্রাক্তন শেরাটন)-বাংলামটর-সোনারগাঁও ইন্টারসেকশনে আন্ডারপাস নির্মাণের প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬৫ কোটি টাকা। নির্মিতব্য মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ আগামী বছরের ডিসেম্বর নাগাদ শেষ হওয়ার কথা।
জনবসতিপূর্ণ পুরান ঢাকার যানজট নিরসন ও উন্মুক্ত স্থানের সংস্থান করার লক্ষ্যে নেয়া হয়েছে আরবান রিন্যুয়াল প্রকল্প। গাজীপুর থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেন নির্মাণের কাজ গত বছরের ৩১ অক্টোবর শুরু হয়েছে। এছাড়া বর্তমানে খিলগাঁও ফ্লাইওভারের সায়েদাবাদ প্রান্তে ৬২০ মিটার দীর্ঘ আরেকটি লুপ নির্মাণের কাজ চলছে, যা আগামী বছরের জুন নাগাদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে বলেছেন, এসব কার্যক্রম ও প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে ঢাকার যানজটের তীব্রতা কমে যাবে। যার ফলে ঢাকাকে একটি অত্যাধুনিক রাজধানী হিসাবে গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে ঢাকা শহরের জনসংখ্যা ছিল ২ লাখ ৮০ হাজার। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী বর্তমানে এ সংখ্যা ১ কোটি ৬০ লাখ। যা ১৯৭২ সালের তুলনায় প্রায় ৬০ গুণ বেশি। আগামীতে জ্যামিতিক হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনায় রেখেই অত্যাধুনিক রাজধানী গড়ার পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শুরু হয়ে কুড়িল, বনানী, মহাখালী, তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর, সায়েদাবাদ ও যাত্রাবাড়ী হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। এর মূল অংশের দৈর্ঘ্য হবে ৪৭ কিলোমিটার। বর্তমানে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রথম পর্যায়ের ভূমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম চলছে।
এক্সপ্রেসওয়ের পাইল ড্রাইভিং শুরু হলে ভূমি অধিগ্রহণে জটিলতা দেখা দেয়। যার কারণে গত বছরের মে মাসে অনুষ্ঠিত এক সভায় ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ব্যক্তি মালিকানাধীন ভূমি অধিগ্রহণ যথাসম্ভব পরিহারের লক্ষ্যে এই এক্সপ্রেসওয়ের এলাইটমেন্ট ও ডিজাইন সংশোধনের সিদ্ধান্ত হয়। পরে ডিসেম্বর বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ইটালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে সরকারের সংশোধিত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
বিমানবন্দর-গাজীপুর বিআরটি লেন
গাজীপুর থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেন নির্মাণের ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৩৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। এরমধ্যে ৬৫৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সাড়ে ৪ কিলোমিটার এলিভেটেড অংশ সেতু বিভাগ অধীনস্থ সংস্থা 'বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ' বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্পটি ইতিমধ্যে একনেকের অনুমোদন পেয়েছে। উভয়দিকে ঘণ্টায় ৪০ হাজার যাত্রী পরিবহনে সক্ষম বিআরটি বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে গতবছরের ৩১ অক্টোবর। বিআরটি নির্মাণ, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য শতভাগ সরকারি মালিকানায় 'ঢাকা বিআরটি' গঠন করা হয়েছে।
ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চন্দ্রা পর্যন্ত প্রায় ৪২ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে প্রাক-সম্ভাব্যতা সম্পন্ন হয়েছে। যার প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬ হাজার ২৫০ কোটি টাকা। এটি পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশীপ বা পিপিপির ভিত্তিতে নির্মাণে বিনিয়োগকারী নিয়োগে 'এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট' (ইওআই) আহ্বান করা হলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সাতটি প্রতিষ্ঠান প্রস্তাব দাখিল করে। অন্যদিকে একটি চীনা সরকারি প্রতিষ্ঠান জি-টু-জি ভিত্তিতে নির্মাণে আগ্রহ দেখালে বাংলাদেশ সরকার এতে সম্মতি দেয়। সরকার আশা করছে, এই এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজও যথাসময়ে শুরু করা সম্ভব হবে।
মেট্রোরেল প্রকল্প
উত্তরা তৃতীয় ফেজ থেকে মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (মেট্রোরেল) বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে গতবছরের নভেম্বরে। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ২২ হাজার কোটি টাকা। এটা হবে ১৬টি স্টেশনবিশিষ্ট। এতে উভয়দিকে ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব হবে। মেট্রোরেল নির্মাণ, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সরকার 'ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড' (ডিএমটিসিএল) গঠন করেছে।
মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার
ঢাকা মহানগরীর যানজট নিরসনে মগবাজার, মৌচাক, মালিবাগ এলাকায় চার লেন বিশিষ্ট ৮ দশমিক ২৫ কিলোমিটার 'মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার' নির্মাণের কাজ চলছে। এই ফ্লাইওভারটি সাতরাস্তা, এফডিসি, মগবাজার, মৌচাক, শান্তিনগর, মালিবাগ ও চৌধুরীপাড়াসহ মোট ৮টি মোড় অতিক্রম করবে। এছাড়া মগবাজার ও মালিবাগ রেলক্রসিং অতিক্রম করবে এটি। ২০১৫ সালের ডিসেম্বর নাগাদ ফ্লাইওভারটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
এসব উল্লেখযোগ্য প্রকল্প ছাড়াও রাজধানীর উন্নয়নে যোগাযোগ খাতে আরো বেশকিছু প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- ৪১ কোটি টাকা ব্যয়ে মিরপুর-সেনানিবাস বাইপাস নির্মাণ, ৪৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে মিরপুর দারুস সালাম সড়ক (আনসার ক্যাম্প) থেকে কচুক্ষেত পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ, ১২০ কোটি টাকা ব্যয়ে এ্যাসফল্ট প্ল্যান্টের মাধ্যমে ঢাকা শহরের ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার উন্নয়ন, ১ হাজার ৩০৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নগর অঞ্চল উন্নয়ন, ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে বিরুলিয়া-আশুলিয়া সড়ক নির্মাণ, ১০৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ডেমরা-আমুলিয়া-রামপুরা (শেখের জায়গা সংযোগ) সড়ক নির্মাণ, ৮৯ কোটি টাকা ব্যয়ে শিরনীর টেক থেকে গাবতলী পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ এবং ৭১ কোটি টাকা ব্যয়ে গাবতলী-সোয়ারীঘাট (বাদামতলী) সড়ককে চার লেনে উন্নীতকরণ।
ভাড়াটে সন্তানে নগরীতে চলছে ভিক্ষাবৃত্তির ব্যবসা!

ভাড়াটে সন্তানে নগরীতে চলছে ভিক্ষাবৃত্তির ব্যবসা!

নগরীতে ভাড়াটে সন্তান দিয়ে ভিক্ষাবৃত্তির ব্যবসা বেশ জমজমাট। চলতে ফিরতে হরহামেশাই চোখে পড়ে- এক পাল ছেলেপেলে নিয়ে হাজির জনম দুঃখী মা, বাবা, ভাই অথবা বোন। বড় পরিবার, উপার্জনের পথরুদ্ধ- ইত্যাদি গল্প শুনিয়ে মানুষের হৃদয়ে করাঘাত করে এরা নিজেদের ঝুলি ভরে।
মিলন ৯ বছরের শিশু। রাস্তার মোড়ে ভাড়াটে শিশু কোমরে জড়িয়ে তাকে হাত বাড়িয়ে দিতে হয়। সামনে বা পেছনে থাকে কথিত মা। তার কোলেও নিস্তেজ শিশু। সবাই মিলে ট্রাফিক সিগন্যালে ভিক্ষা করছে। দেখে মনে হবে বাবাহীন কোনো পরিবার। কিন্তু ওরা আসলে কেউ আপন নয়। সবাই ভাড়াটে। ওদের কাজই এখন ভিক্ষাবৃত্তি। ভিক্ষাবৃত্তির জগতে শিশু ভাড়া পাওয়া যায়। ভাড়ায় আসে মা এবং আট-নয় বছরের সন্তান। ভাড়াটেরা মিলে হয়ে যায় এক পরিবার। চলে ভিক্ষাবৃত্তি।
রাজধানী ঘুরে দেখা গেছে, ভাড়াটে সন্তান দিয়ে ভিক্ষাবৃত্তির ভয়াবহ দৃশ্য। ভাড়াটে শিশু নিয়ে ভিক্ষার পেছনে আছে শক্তিশালী একটি চক্র। এ চক্রটি শিশু চুরি থেকে শুরু করে দরিদ্র, স্বামী পরিত্যক্তা ও মাদকাসক্ত মায়েদের সন্তান ভাড়া নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি চালাচ্ছে। দিন শেষে শিশু ভাড়া হিসেবে দেড় থেকে দু’শ টাকা আর কিশোরী মায়ের জন্য কিছু দিয়ে বাকি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ওই চক্রটি। বিনা শ্রম আর পুঁজিতে চলছে এই ব্যবসা। আইন-শৃংখলা বাহিনী ও ট্রাফিক পুলিশের চোখের সামনে শিশুদের দিয়ে এমন নির্মম ব্যবসা চালালেও কেউ কিছু বলে না। কোনো এক অদৃশ্য কারণে এসব সংস্থার সদস্যরা নিশ্চুপ।
মাত্র ১২ বছর বয়সে বিয়ে হয় মিতুর। দুই বছরের মাথায় বিয়েটা ভেঙে যায়। কিন্তু ততদিনে কোলে চলে এসেছে একটি মেয়ে শিশু। জীবনের টানে একদিন সন্তান নিয়ে মিতু চলে আসে রাজধানীতে। তারপর আরও দু’বার বিয়ে করে সংসারী হওয়ার চেষ্টা করেছে সে। বিয়ে টেকেনি কিন্তু কোলে এসেছ আরো দু’টো সন্তান। সন্তান ভাড়া দিয়ে তার এখন প্রতিদিনের আয় ৬০০ টাকা। এই টাকায় মিতু মাদক সেবন করছে। মিতু আরও সন্তান চায়। প্রতি সন্তানে আয় ২০০ টাকা। যা দিয়ে পাওয়া যাবে আরও মাদক, আরও নেশা।
মানবাধিকার নেত্রী অ্যাডভোকেট এলিনা খান বলেন, এমন নিষ্ঠুরতা মানবাধিকার শুধু লংঘনই হচ্ছে না, পুরো জাতি ও সমাজ অপরাধী হচ্ছে। এমন বর্বরতা বন্ধ করা জরুরি।
জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক ক্লিনিক্যাল ও ইন্টারন্যাশনাল কার্ডিওলজির ডা. তৌফিকুর রহমান ফারুক বলেন, অচেতন অবস্থায় এসব শিশুর মৃত্যু হতে পারে। চেতনানাশক ওষুধ খাওয়ানোর ফলে নিমোনিয়া, লিভার নষ্ট থেকে শুরু করে নানা ধরনের রোগ হতে পারে।
সূত্র: দৈনিক যুগান্তর
এবার প্রেমের ফাঁদে ফেলে বাণিজ্য!!!

এবার প্রেমের ফাঁদে ফেলে বাণিজ্য!!!

বাণিজ্যের কত প্রকারই না ধরণ! কেউ রূপের ফাঁদে ফেলে মানুষ ঠকায়, আবার কেউ প্রেমের ফাঁদে ফেলে পকেট ভরে। কমার্শিয়াল এই যুগে মানুষের দেহ-মন সবই এখন অর্থ উপার্জনের হাতিয়ার। আর এর সাথে যখন যুক্ত হয় কূটিল মস্তিষ্ক, তখন তো আর উপায়ই থাকে না!
মেয়েটার নাম, দোলা আক্তার। বয়স মাত্র ২০ বছর। এই বয়সে যখন তার অনাগত জীবন স্বপ্নে বিভোর থাকার কথা, ঠিক সে সময়ই সে মেতে উঠেছিল প্রতারণার ছোবল দিতে। মোবাইল ফোন নম্বর সংগ্রহ করে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সে গড়ে তুলত প্রেমের সম্পর্ক। দেখা করার নামে নির্ধারিত ফ্ল্যাটে নিয়ে কৌশলে ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে আপত্তিকর ছবি তুলে রাখত দোলা এবং তার সঙ্গীরা। পরে ওই ছবি দেখিয়ে ব্যবসায়ীর কাছ থেকে দাবি করা হতো লাখ লাখ টাকা। টাকা দিতে আপত্তি করলেই গ্রেফতার এবং সংবাদ প্রচারের ভয়। ভুয়া প্রেমিকা, পুলিশ এবং সাংবাদিকের সমন্বয়ে গড়ে তোলা ওই প্রতারক চক্রটি প্রেমের ফাঁদে ফেলে অনেক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা।
প্রতারিত এক ব্যবসায়ীর অভিযোগের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার রাজধানীর মিরপুর পাইকপাড়ার একটি বাসা থেকে ওই চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ওয়্যারলেস সেট, হ্যান্ডকাফ ও একটি ডিজিটাল ক্যামেরা। ডিবির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেনের তত্ত্বাবধানে গ্রেফতার অভিযান চালান ডিবির সহকারী পুলিশ কমিশনার রহমত উল্লাহ্ চৌধুরী।
গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে- দোলা আক্তার, আবু তালেব, ভুয়া ডিবি ইন্সপেক্টর আজাহার উদ্দিন খান, ভুয়া ডিবির সাব-ইন্সপেক্টর মো. মোস্তফা, ভুয়া সাংবাদিক শামীম সিকদার ও সালমা বেগম। প্রতারক চক্রটির মূল হোতা আবু তালেব নিজেকে ডিবির সহকারী কমিশনার পরিচয় দিত।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ২৬ আগস্ট লন্ডন প্রবাসী এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে দোলার আপত্তিকর ছবি তোলে। পরে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তারা ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ২৪ লাখ টাকা আদায় করে। গত ২০ ফেব্রুয়ারি এক উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তার কাছ থেকে একই ভাবে ১৭ লাখ টাকা আদায় করে।
সর্বশেষ মিরপুরের এক রাজনৈতিক নেতার কাছ থেকে তারা ৫ লাখ টাকা আদায় করে। ওই নেতার মিরপুর থানায় দায়ের করা মামলার সূত্র ধরে প্রতারকদের গ্রেফতার করা হয়।
সূত্র: দৈনিক সমকাল
আসছে বৈশাখ, চলছে মঙ্গল শোভাযাত্রার মহাযজ্ঞ

আসছে বৈশাখ, চলছে মঙ্গল শোভাযাত্রার মহাযজ্ঞ

চৈত্রের প্রখর রোদের নিচে মুহূর্তের জন্য দাঁড়িয়ে থাকাও কঠিন, যেন শরীরটাই ঝলসে যাচ্ছে! তপ্ত রোদের তেজে যেন ঝলসে ওঠছে পিচ ঢালা পথ। হঠাৎ করেই উড়ে এসে জুড়ে বসা দমকা হাওয়ায় উড়ছে ধুলোবালি। কোথা থেকে নীলাকাশে ভেসে আসে মেঘের ভেলা। আর বিদ্যুতের আচমকা ডাক-চিৎকারে ভিজে যায় বাংলাদেশ! বাংলার এমন প্রাকৃতিক চিত্রই বলছে, বৈশাখের বেশি দেরি নেই। আসছে বৈশাখ শত ব্যস্ততার এই নগরেও। বৈশাখ যতটাই এগিয়ে আসছে আর ততোটাই বস্ততা বাড়ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের।
বৈশাখকে বরণ করে নিতে প্রতিবছর চারুকলা প্রাঙ্গণ থেকেই বের হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। আর এই মঙ্গল শোভাযাত্রাকে সফলের প্রস্তুতি নিতেই চারুকলায় এখন চলছে মহাযজ্ঞ। নবীন-প্রবীণ শিক্ষার্থীরা দিনরাত পরিশ্রম করছেন মঙ্গল শোভাযাত্রাকে সফল করতে। চারুকলার ফটকে পা রাখলেই মঙ্গল শোভাযাত্রার কর্মযজ্ঞ চোখে পড়বে।
চারুকলা প্রাঙ্গণে এখন চলছে উৎসব উৎসব রব। এখানে কেউ জলরঙে ছবি আঁকছেন, কেউ সরায় ফুটিয়ে তুলছেন বাহারি দৃশ্য, আবার কেউ মুখোশ তৈরি করছেন। কেউ কেউ এসব সাজানোর প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখা এসব শিল্পকর্ম বিক্রির কাজ করছেন কেউ কেউ। শোভাযাত্রাকে বৈচিত্র্যময় করে তুলতে প্রতিবছরের মতো এবারও থাকছে রাজা-রানির মুখোশ, বানর, পাখিসহ বিভিন্ন জীবজন্তুর লোকজ অবকাঠামো।
এবার মঙ্গল শোভাযাত্রায় একটি বৃহৎ হাঁসকে প্রাধান্য দিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে মঙ্গল শোভাযাত্রার কাজ। তবে হাঁসকে প্রাধান্য দেওয়া হলেও বরাবরের মতো বাংলা সংস্কৃতির সব কিছুই থাকছে এবারের আয়োজনে। সরাচিত্র, খেলনা, পুতুল, মা ও শিশু, বাঘ, হরিণ, মাছ, মাছের ঝাঁক, মুখোশ, হাত পাখা, শখের হাঁড়ি, বিড়াল, লক্ষ্মী পেঁচাসহ আরও নানা ধরনের শিল্পকর্ম থাকছে। সারা বিশ্বের বাঙালির কাছে হাজার হাজার বছরের পুরনো গৌরবোজ্জল বাংলা সংস্কৃতি তুলে ধরার প্রত্যয়ে প্রতিদিন চারুকলার শিক্ষার্থীরা এখন দিনরাত পরিশ্রম করছেন।
বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রাকে সফল করতে আয়োজকদের বেশ খরচ হয়। অর্থসংস্থানের জন্য চারুকলায় এখন উন্মুক্ত শিল্পকর্ম প্রদর্শনী চলছে। প্রাঙ্গণে আঁকা হচ্ছে ছবি। রঙিন হয়ে উঠছে সরা, যাতে চিত্রিত হচ্ছে বাংলার লোকজ মোটিভ। এসব শিল্পকর্ম ঝুলিয়ে রাখা হচ্ছে দেয়ালে। নবীন শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি দেয়ালে উপস্থাপিত হয়েছে চারুকলার প্রবীণ শিক্ষার্থীদের কাজও। রয়েছে শিক্ষকদের শিল্পকর্মও।
বিক্রি করার জন্য শিল্পকর্মগুলোর মধ্যে পাখির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ টাকা থেকে ১,০০০ টাকা, সরার দাম ২০০ থেকে ১,০০০ টাকা, জল রঙে আঁকা বিভিন্ন চিত্রকর্মের দাম ধরা হয়েছে ৩,০০০ টাকা থেকে ১০,০০০ টাকা এবং বিভিন্ন মুখোশের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০০ টাকা থেকে ৮,০০০ টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া হাত পাখা, বিভিন্ন শো-পিসও বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। যার দাম ১০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত।
মাটির সরাকে রঙিন করে তুলছিলেন মাস্টার্সের শিক্ষার্থী তানিয়া। তিনি বলেন, ‘চারুকলার নানা আয়োজনের বড় আয়োজন এই বৈশাখের মঙ্গলশোভাযাত্রা। প্রতি বছর চারুকলা থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়। বাঙালির ঐতিহ্য এই শোভাযাত্রার কাজ করতে পেরে গর্বিত বোধ করি। ভর্তি হওয়ার পর থেকেই প্রতি বছর মঙ্গলশোভাযাত্রার কাজ করি।’
রাজা-রানির মুখোশ তৈরি করতে যে পেপার ম্যাশ প্রয়োজন, তাই বানাচ্ছিলেন চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা। মাটি দিয়ে এই পেপার ম্যাশ তৈরি করতে হয়। রাজা-রানির মুখোশ মঙ্গল শোভাযাত্রার বৈচিত্রময় করে তোলে।
বৈশাখ আসার আগেই চারুকলা অনুষদের সামনের দেয়ালের বাইরের দিকটাও সাজবে নতুন সাজে। আবহমান বাংলার দৃশ্য ফুটে উঠবে তাতে। চারুকলা অনুষদের সাজ সাজ রব জানান দিচ্ছে, খুব দূরে নয় বৈশাখ।
গাছে গাছে আমের মুকুল, কোকিলের কুহুতান আর গাছের নতুন কচি পাতায় ঋতুরাজ বসন্ত বিদায় নিবে আর মাত্র কয়েক দিন। বাংলা নতুন বছরের প্রথম দিনের অপেক্ষায় এখন দিন গুণছে বাঙালিরা। বৈশাখও যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে সবাইকে। বৈশাখের প্রথম দিনে নগরজুড়ে থাকে উৎসবের জোয়ার।
বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে ঢাকা

বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে ঢাকা

দিন যত যাচ্ছে রাজধানী ঢাকা ক্রমেই বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। একটি মেগাসিটির যে নাগরিক সুবিধা থাকার কথা তা পূরণ হচ্ছে না। এ কারণে সেবাপ্রতিষ্ঠানগুলো তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারছে না। দিন দিন নাগরিক সেবার মান কমেই যাচ্ছে। নগরবিদেরা নিয়ন্ত্রণহীন বাড়িভাড়া, বিশুদ্ধ পানির সংকট, গ্যাস সংকট, অপরিচ্ছন্ন নালা-নর্দমা ও মশার উপদ্রবকে এ মুহূর্তে নাগরিকদের জন্য পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
কথায় কথায় নগরে ঘর-বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি এখন রাজধানীবাসীর কাছে নিত্যদিনের যন্ত্রণার মতো হয়ে গেছে। বছরের শুরু ও মাঝামাঝিতে আগাম নোটিস ছাড়াই ভাড়া বৃদ্ধি করা হচ্ছে। মানা হচ্ছে না- ডিসিসি কর্তৃক বাড়িভাড়ার নির্দেশনা। এমনকি ব্যাপারটি সম্পর্কে জানেন না অধিকাংশ বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়া। অন্যদিকে, বাড়িভাড়া বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯১ ও বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ, ১৯৬৪-এর প্রয়োগ হচ্ছে এমন নজিরও নেই।
রাজধানীতে দিন দিন তীব্র হচ্ছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। গরম বৃদ্ধির সঙ্গে এ সংকট আরও বাড়ছে। ওয়াসার ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, রাজধানীতে দৈনিক পানির চাহিদা ২৫০ কোটি লিটার। কিন্তু তারা সরবারহ করছে ২০০ কোটি লিটার। পানি সংকটের কারণে প্রতিদিনই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের ড্রামে করে, ওয়াসার গাড়িতে ভরে এবং ওয়াসার পানির পাম্পে গিয়ে দীর্ঘ লাইনে পানি সংগ্রহ করতে দেখা যায়। তা ছাড়া এ সময় প্রতি বছর বিদ্যুৎ সংকটের কারণে পানিস্বল্পতা তৈরি হয়।
আগে শীতে গ্যাস সংকট থাকলেও এখন গরমেও নগরীর গ্যাস সংকট কাটছে না। গ্যাসের অভাবে আবাসিক গ্রাহক ও শিল্প কারখানার মালিকরা বিপাকে পড়েছেন। তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চাহিদার তুলনায় গ্যাসের সরবরাহ কম। বর্তমানে ঢাকা মহানগর এলাকায় গ্যাসের চাহিদা ১ হাজার ৯০০ মিলিয়ন ঘনফুট। অথচ সরবরাহ করা হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। এ ছাড়া গ্যাসের পুরনো লাইনের ত্রুটি ও অবৈধ সংযোগের কারণে বিদ্যমান গ্যাস সংকট থেকেই যাচ্ছে।
সন্ধ্যা নামতেই নগরীর গৃহিণীদের মধ্যে ভর করে মশা আতঙ্ক। শুধু সন্ধ্যা নয়, এখন সারাদিনই শশার উপদ্রব বলা চলে। নগরবাসীর অভিযোগ, সরকারের সেবাদানকারী সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর মশা নিয়ন্ত্রণে দৃশ্যত কোনো উদ্যোগ না থাকায় নগরজুড়ে এখন মশার উপদ্রব।
অপরিকল্পিত নগরায়ণের ফলে ঢাকার ড্রেন ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাপনারও বেহাল দশা। কিন্তু ঢাকা ওয়াসা, সিটি করপোরেশন সে অনুপাতে নাগরিকদের স্যুয়ারেজ লাইন ও নালা-নর্দমার সুবিধা দিতে পারছে না। পরিবেশবাদী সংগঠন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) তথ্যে, ঢাকা শহরের গৃহস্থালির ময়লা-আবর্জনাসহ অন্যান্য বর্জ্য পদার্থের ৬০ শতাংশ সরানোর দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। বাকি ৪০ শতাংশ প্রতিষ্ঠানটি জনবলস্বল্পতাসহ নানাবিধ কারণে সরাতে অক্ষম।
সূত্র: দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন
রূপের ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইল।

রূপের ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইল।

 
 রূপ-যৌবন তাদের পুঁজি। আর তা দিয়েই ফাঁদে ফেলা তাদের পেশা। প্রথমে বিত্তশালী কারো সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক। পরে তাকে নিজের বাসায় নিয়ে যাওয়া। চলে দৈহিক মেলামেশা। সুযোগ বুঝে একদিন কৌশলে বাসায় আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবি। কখনো বা গোপন ক্যামেরায় ভিডিও করে তা দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করা। মুক্তিপণ বা ব্ল্যাকমেইল করে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় হলেই ছেড়ে দেয়া হয় ভুক্তভোগীদের। লোক-লজ্জার ভয়ে কেউ এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপও নিতে চান না। এই সুযোগই কাজে লাগাতো তারা। গতকাল পুলিশ-র‌্যাবের পৃথক অভিযানে এমন দুটি চক্রকে আটক করা হয়েছে। আটকের পর তারা নিজেরাই এসব অপকর্মের কথা স্বীকার করেছে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা সূত্র জানায়, শুক্রবার উজ্জ্বল নাগ (৪৩) নামে এক গার্মেন্ট কর্মকর্তাকে এভাবেই দেহের ফাঁদে ফেলে আটকে রাখে একটি চক্র। এরপর তার কাছে প্রথমে ৩০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। এত টাকা দেয়ার সামর্থ্য নেই জানালে শেষে ১০ লাখ টাকায় রফা হয়। এর মধ্যে এক বন্ধুর কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা নিয়েও যায় চক্রটি। পরে পরিবার ও গার্মেন্ট কারখানার পক্ষ থেকে পৃথক দুটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। একই সঙ্গে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানানো হলে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল তিন দিনের মাথায় উজ্জ্বল নাগকে বাসাবোর কদমতলার একটি বাসা থেকে উদ্ধার করেন। এসময় আটক করা হয় রোজী আক্তার তানহা (২৩) ও তার চার সহযোগীকে। অন্যরা হলো- নিলয় আহমেদ রাজু (২৫), ইসমাইল (১৮), মিলন (১৮) ও ইব্রাহীম (১৯)। আটককৃত রাজু ও তানহা বাসাবোর ওই বাসায় লিভটুগেদার করতো বলেও স্বীকার করেছে।
অপহৃত উজ্জ্বল নাগ বলেন, তিনি গাজীপুরের কোনাবাড়িতে গ্রীনল্যান্ড নামে একটি গার্মেন্ট কারখানায় ডিজিএম হিসেবে চাকরি করেন। কয়েক মাস আগে তানহা নামে এক তরুণীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এরপর থেকে তানহার সঙ্গে তার নিয়মিত ফোনে কথা হতো। তানহা তাকে নানা বলে ডাকতো। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় তানহা তাকে ফোন করে তার শিশু বাচ্চা ভীষণ অসুস্থ বলে জানায়। তাকে একবার তার বাসায় গিয়ে শিশুটিকে ডাক্তার দেখাতে সহযোগিতা করতে বলে। সন্ধ্যার দিকে উজ্জ্বল নাগ ফলমূল নিয়ে বাসাবোর ৬ নম্বর কদমতলার ষষ্ঠ তলায় তানহার বাসায় যান। বাসার ভেতরে ঢুকেই বুঝতে পারেন তিনি ভুল করে ফেলেছেন। তানহার মন ভোলানো আহ্বানে সাড়া দিতে গিয়ে ফাঁদে পড়েছেন। উজ্জ্বল নাগ বলেন, ওই বাসায় ঢোকার পরপরই কয়েকজন যুবক তার হাত বেঁধে ফেলে। মুখে স্কচটেপ আটকিয়ে প্রথমে তাকে পেটানো হয়। পরে তার কাছে ৩০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। তিনি এত টাকা দেয়ার সামর্থ্য নেই জানালে দেন-দরবার করে শেষে ১০ লাখ টাকায় রাজি হয়। তানহা ও তার সহযোগীরা তার পকেট থেকে এটিএম কার্ড ও পিন নম্বর নিয়ে যায়। কিন্তু ওই একাউন্টে কোন টাকা ছিল না। রাতেই তারা স্ত্রী মল্লিকা বিশ্বাসকে ফোন করে মিথ্যা বলতে বলে। তাদের শেখানো মতে তিনি স্ত্রীকে ফোন দিয়ে এক বন্ধুর বাসায় পার্টিতে আছেন বলে জানান। একেবারে সকালে ফিরবেন বলে স্ত্রীকে কোন চিন্তা করতেও নিষেধ করেন। উজ্জ্বল নাগ বলেন, আমার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে এসব আমাকে বলতে বাধ্য করা হয়েছে। রাত দুইটার দিকে আমাকে গার্মেন্ট মালিক জুলফিকার সাহেবকে ফোন করতে বলে। ওরা শিখিয়ে দেয় ‘মা অসুস্থ, হার্ট ও কিডনি নষ্ট হয়েছে। এ্যাপোলোতে ভর্তি। জরুরি ১০ লাখ টাকা লাগবে, মাদ্রাজ নিয়ে যাবো’ বলার জন্য। তাদের কথামতো কাজ করি। এমডি স্যার সকালে টাকার ব্যবস্থা করে দেবেন বলে জানান। সারা রাত আমাকে বসিয়ে রাখা হয়। পরদিন এমডি বাদ দিয়ে অন্য কোন বন্ধুর কাছ থেকে টাকা নিয়ে দিতে বলে। পরে অপু ও ইমনের সঙ্গে কথা বলি। ওদের সঙ্গেও একই কথা বলি। ওরাও টাকা দেয়ার আশ্বাস দেয়। কিন্তু এদিকে ওরা আমাকে নির্যাতন করতে থাকে। পরে জাহাঙ্গীর নামে আরেকজনকে ফোন দেই। সে প্রাথমিকভাবে ৪০ হাজার টাকা দিতে রাজি হয়। শনিবার সন্ধ্যায় ওদের শেখানো কথামতো খিলক্ষেতে আমার এক মাসতুতো বোন যাবে। ওর নাম শৈলী। পরে তানহা নিজে শৈলী সেজে রাজুকে সঙ্গে নিয়ে জাহাঙ্গীরের অফিস পিয়ন বিশ্বজিতের কাছ থেকে ওই টাকা নিয়ে আসে। পরদিন তাকে এমন কাউকে ফোন করতে বলা হয় যাকে অফিস কিংবা পরিবারের কাউকে চেনে না। পরে তিনি কৌশলে তার নিজ অফিসের ম্যানেজার কো-অর্ডিনেশন বাদল রায়কে ফোন দেন। বাদল রায় পাঁচ লাখ টাকা দিতে চায়। গতকাল সন্ধ্যায় বাদল রায়ের কাছে টাকা আনতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে তানহা। পরে পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে। একই সঙ্গে বাসায় থাকা অন্যদের আটক করে।
এদিকে তানহা জানায়, তার আগে একটি বিয়ে হয়েছিল। ওই স্বামী তাকে বাচ্চাসহ ফেলে গেছে। এরপর থেকে সে দেহব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। উত্তরার তিন নম্বর সেক্টরের ১০ নম্বর রোডের একটি ফ্ল্যাটে সে নিয়মিত যেত। সেখানেই বিভিন্ন ক্লায়েন্টের সঙ্গে সে অর্থের বিনিময়ে দৈহিক মেলামেশা করতো। ওই ফ্ল্যাটেই উজ্জ্বল নাগের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এরপর উজ্জ্বল নাগ তাকে আলাদা ফ্ল্যাটে রাখার জন্য চুক্তি করেন। ছয় মাসে ছয় লাখ টাকা দেয়ার কথা ছিল তার। এগার হাজার টাকায় ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেয়া হয়। তানহা বলে, ফ্ল্যাটে আমার সঙ্গে বয়ফ্রেন্ড রাজু থাকত। আমরা লিভটুগেদার করতাম। আর মাসে ৪-৫ বার উজ্জ্বল নাগ বাসায় আসতো। এছাড়া, মাঝে মধ্যেই সে আমাকে বিভিন্ন বায়ারের কাছে নিয়ে গেছে। কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী আমার টাকা দেয়নি। তাই আমি কৌশলে তাকে ডেকে এনে আটকে রেখে টাকা আদায়ের চেষ্টা করেছিলাম। তানহার বয়ফ্রেন্ড রাজু জানায়, এয়ারপোর্টের একটি অফিসে কাজ করার সময় তানহার সঙ্গে তার পরিচয়। এরপর তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। আমরা একসঙ্গে থাকতাম। আমি জানি ও কী করে। ও ভালো হতে চেয়েছিল। এ জন্য আমি ওকে সঙ্গ দিতাম। উজ্জ্বল নাগকে ওর পরিকল্পনায় আটক করি। ৪০ হাজার টাকা নিয়েছিলাম। কিন্তু বাকি টাকা নেয়ার আগেই পুলিশ আমাদের ধরে ফেলে।
এদিকে র‌্যাব-১ এর একটি দল গতকাল বারিধারার ডিওএইচএসের ৭ নম্বর লেনের ৪৪৮ নম্বর অ্যাপার্টমেন্টের তৃতীয় তলায় অভিযান চালিয়ে বার জনকে আটক করেছে। তারাও বিভিন্ন গার্মেন্ট মালিকসহ ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদেরকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ওই বাসায় ডেকে আনতো। পরে অফিসে থাকা মহিলাদের সঙ্গে অবৈধ মেলামেশা করার সুযোগ করে দিতো। কৌশলে এসব দৃশ্য ভিডিও করা হতো। পরে আপত্তিকর অবস্থার সেই ভিডিও দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করা হতো। আদায় করা হতো বিপুল অর্থ। কখনো কখনো অবৈধ অস্ত্র দেখিয়ে শারীরিক ভাবে নির্যাতন এবং সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রেখেও টাকা আদায় করতো তারা। ওই বাসা থেকে আটককৃতরা হলো- ওমর ফারুক (২০), আল ইমরান হোসেন (২৪), আতিকুর রহমান রায়হান (২৫), নিহার রঞ্জন দাস (২৫), মোন্তাছের রহমান রাজীব (২৩), তুহিন হোসেন (১৮), সাখাওয়াত হোসেন (৩৩), আনোয়ার হোসেন (৩৪), আল আমীন হোসেন (১৭), আইযুব আলী (৩৫), মঈনুল ইসলাম (২২) ও মোস্তফা (৩১)। র‌্যাব কর্মকর্তারা জানান, ওয়াজিবুল্লাহ মিলন প্রকাশ ওরফে তপু (৩৩) ও রিসাদ প্রকাশ ডিটাস (২৮) নামে দুই যুবক পালিয়ে গেছে। তারাই হলো এই অফিসের মালিক ও মূল হোতা। আটককৃতরা তাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করতো। ওই অফিস থেকে ৩৮টি ব্ল্যাংক কার্টিজ পেপার, ১৫টি পাসপোর্ট, ১টি মোটরসাইকেল, ২ বোতল ফেনসিডিল, ১টি ম্যাগাজিন ও ১টি মেটাল ডিটেক্টর উদ্ধার করা হয়। র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক এটিএম হাবিবুর রহমান বলেন, বায়িং হাউজের আড়ালে তারা এই ব্ল্যাকমেইলিং করতো। তাদের টার্গেট ছিল সমাজের বিত্তশালীরা। বিশেষ কারে গার্মেন্ট সেক্টরের বড় কর্মকর্তাদের তারা অফিসে নিয়ে নারীঘটিত ব্যাপারে ব্ল্যাকমেইল করতো। আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
১৮ কিশোরকে দেশে পাঠালো ভারত

১৮ কিশোরকে দেশে পাঠালো ভারত

দুই বছর সাজা শেষে বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে দেশে ফিরেছে ১৮ কিশোর। সোমবার রাতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এ কিশোরদের বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি'র) কাছে হস্তান্তর করে। এরা হল, হারুন-অর-রশিদ (১৭), বাবু মণ্ডল (১৩), নয়ন হোসেন (১৩), সবুজ হোসেন (১৫), জসিম হাওলাদার (১৮), আব্দুল গফফার (১৪), আব্দুর রহমান (১১), খোরশেদ আলম (১৯), মামুনুর রশিদ (১৮), মিলন শেখ (১৭), আল-আমিন (১৬), রাকেশ (১৪), মইনুর রহমান (১৫), সুমন হোসেন (১৪), বিজয় বিশ্বাস (১৩), অমিতোষ (১৪), আলী হোসেন (১৯) ও শাহরিয়ার দিপু (১৩)। ১৮ কিশোর খুলনা, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, সাতক্ষীরা ও ঝিনাইদহ জেলার বাসিন্দা।

জানা যায়, কলকাতা শহরে গিয়ে কাজের সন্ধানে ঘোরাঘুরির সময় পুলিশের হাতে আটক হন ওই ১৮ কিশোর। পরে অনুপ্রবেশের অভিযোগে দেশটির আদালত তাদের দুই বছর কারাদণ্ড দেয়। সাজা শেষে দক্ষিণাশ্বরের 'দুর্বাশ্রম' শেল্টার হোমে তাদের রাখা হয়। সেখান থেকে তাদেরকে ভারত সরকারের দেয়া বিশেষ পাশের মাধ্যমে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ জানায়, ভাল চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন সময় দালালরা অবৈধ পথে এদেরকে ভারতে পাচার করেছিল।
বাংলা ব্যবহার নিশ্চিত না করায় ৬ সচিবের বিরুদ্ধে অভিযোগ

বাংলা ব্যবহার নিশ্চিত না করায় ৬ সচিবের বিরুদ্ধে অভিযোগ


গণমাধ্যমের বিজ্ঞাপন, সাইনবোর্ডসহ সব ধরনের নম্বর ও গাড়ির নেমপ্লেটে বাংলা ভাষা ব্যবহার নিশ্চিত করতে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ না মানায় আদালত অবমাননার অভিযোগে ৬ সচিবের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আজ হাইকোর্টেরআইনজীবী ড. ইউনূস আলী আকন্দ এই অভিযোগ দায়ের করেন।
গত ১৭ই ফেব্রুয়ারি ভাষার মাসে দেশের সব সম্প্রচার মাধ্যমে প্রচারিত বিজ্ঞাপন, গাড়ির নম্বর প্লেটও ব্যানার বাংলা ভাষায় প্রচলনের অন্তবর্তীকালীন নির্দেশ দেন বিচারপতি কাজী রেজাউল হক ও এ বি এম আলতাফ হোসেনর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বেঞ্চ। এ আদেশ এক মাসের মধ্যে কার্যকরের নির্দেশও দেয়া হয়।
মন্ত্রিপরিষদ, আইন, স্বরাষ্ট্র, সংস্কৃতি, তথ্য ও প্রযুক্তি এবং শিক্ষামন্ত্রণালয়ের সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে। আইনজীবী জানান, আদালতের আদেশের পর প্রায় দুই মাস অতিক্রম হতে চলেছে কিন্তু আদেশ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। তাই তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। সোমবার এ বিষয়ে ওই একই কোর্টে শুনানি হতে পারে।
হবিগঞ্জ সীমান্তে তিন বাংলাদেশীকে পিটিয়ে হত্যা

হবিগঞ্জ সীমান্তে তিন বাংলাদেশীকে পিটিয়ে হত্যা

হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের নিকটবর্তী ভারত সীমান্তের মজুমদারবাড়ি এলাকায় ভারতীয় নাগরিকদের পিটুনিতে ৩ বাংলাদেশী নিহত হয়েছে।
গত শনিবার রাতে চুনারুঘাটের গাজীপুর ইউনিয়নের হাপ্টারহাওর গ্রামের ছিদ্দিক আলী (৫৫), মানিকভান্ডার গ্রামের আনোয়ার (৪০) ও উসমানপুর গ্রামের উমর আলী (৪৫) ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের খোয়াই জেলার মজুমদারবাড়ি গ্রামে গেলে ওই এলাকার বাসিন্দারা গরুচোর সন্দেহে তাদের আটক করে। গতকাল রোববার সকালবেলা তাদের ক্ষতবিক্ষত লাশ মজুদমারবাড়ি এলাকায় পড়ে থাকতে দেখে গ্রামবাসী বিজিবিকে খবর দেয়।
চুনারুঘাটের গাজীপুর ইউপি চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এ ব্যাপারে চুনারুঘাটের বাল্লা বিজিবি কমান্ডার মোজাফফর হোসেন জানান, এ ব্যাপারে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। দুয়েকদিনের মধ্যে লাশ বাংলাদেশে ফেরত দেয়া হবে।