ভুটান থেকে সাড়ে ৩ হাজার মে.ওয়াট বিদ্যুত আনা হচ্ছে


এম শাহজাহান ॥ ভুটান থেকে সাড়ে ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানির আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দিবে সরকার। উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে এই বিদ্যুত আমদানি করা হবে। প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সহযোগিতায় ভুটান বর্তমানে ১০টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এই প্রকল্পের বিদ্যুত উৎপাদনের ক্ষমতা প্রায় ৬ হাজার ৩শ’ মেগাওয়াট। ইতোমধ্যে বিদ্যুত বিভাগ ভুটান থেকে বিদ্যুত আমদানির সম্ভাবনার বিষয়টি আলোচনা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছে। তাতে ভুটানের সঙ্গে বিদ্যুত খাতে সহযোগিতার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সুপারিশ করা হয়েছে। ভুটানের থিম্পুতে বাংলাদেশ-ভুটানের বাণিজ্য সচিব পর্যায়ে আগামীকাল বুধবারের বৈঠকেই এ সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য। জানা গেছে, ৯ ও ১০ এপ্রিল বাংলাদেশ-ভুটানের বাণিজ্য সচিব পর্যায়ে দু’দিনব্যাপী বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এই বৈঠকে বিদ্যুত আমদানির পাশাপাশি ট্রানজিট, শুল্কমুক্ত সুবিধায় রফতানি বাণিজ্য সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করা হবে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ থেকে ৮ সদস্যের একটি উচ্চপর্যাযের সরকারী প্রতিনিধি দল আজ মঙ্গলবার ভুটানের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন।
সচিব পর্যায়ের বৈঠকে দু’দেশের মধ্যে ট্রানজিট চুক্তির খসড়া অনুমোদনসহ নৌরুট চালু এবং বৈদেশিক বাণিজ্যে অর্থ আদান-প্রদানে জটিলতা নিরসন, শুল্কমুক্ত ১৮টি পণ্যের তালিকা সংশোধন, ভুটান কর্তৃক কতিপয় বাংলাদেশী পণ্যের ওপর শুল্কমুক্ত করার নোটিফিকেশন, বাংলাদেশী ফ্রুট জুস রফতানিতে জটিলতা নিরসনে ভুটানের এইচ এস কোডের বর্ণনা সংশোধন, নকুগাঁও ও হালুয়াঘাটকে স্থল কাস্টসম স্টেশন ঘোষণা, বৈদেশিক বাণিজ্যের অর্থ পরিশোধের প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা জোরদারকরণ, ভুটানে ব্যবসায়ী ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি, বাংলাদেশে ভুটানের ১৭টি পণ্য শুল্কমুক্ত সুবিধায় প্রবেশের অনুরোধ, উভয় দেশের শুল্ক কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন, শুল্কমুক্ত ১৮টি পণ্যের ওপর আরোপিত এ্যাডভান্স ট্রেড ভ্যাট প্রত্যাহার, বাংলাদেশের মেরিন একাডেমিতে ভুটানের শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার প্রস্তাব বিষয়ে আলোচনা করা হবে।
এ ছাড়া বিনিয়োগ সুবিধা সংক্রান্ত তথ্য বিনিময়, বেসরকারী খাতে সহযোগিতা, সিমেন্ট ইনস্যুলেটর এবং গ্লাসশীট রফতানি ও পর্যটন খাতে সহায়তা নিয়ে আলোচনা করা হবে সচিব পর্যায়ের বৈঠকে। এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শওকত আলী ওয়ারেছী জনকণ্ঠকে বলেন, নতুন ইস্যু হিসেবে বিদ্যুত আমদানি, ট্রানজিটের খসড়া অনুমোদনের বিষয় অগ্রাধিকার দেয়া হবে। তিনি বলেন, ভুটান থেকে বিদ্যুত আমদানির বিষয়টি নতুন নয়। বাংলাদেশে প্রতিবছর ১১-১২ ভাগ বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশের বিদ্যুত খাতের মাস্টারপ্লানে উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে ভুটান থেকে সাড়ে ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আর তাই বিদ্যুত আমদানির বিষয়টি এবারে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ভুটান ১৭টি পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা চেয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ট্যারিফ কমিশন ৬ পণ্যের সুবিধা দেয়ার বিষয়ে মত দিয়েছে। আগামীকালের বৈঠকে বিষয়গুলো উপস্থাপন করা হবে। বৈঠকে উপস্থাপনের জন্য কার্যপত্র তৈরি করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এতে বিনিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য বিনিময় ও ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

SHARE THIS

0 মন্তব্য(গুলি):