টি-২০ এর প্রথম ম্যাচে আফগানিস্থানকে হারিয়ে বাংলাদেশের সহজ জয় লাভ!


প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল নিজের দেশে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ‘মূল পর্বে’ খেলা। উদ্বোধনী ম্যাচে আফগানিস্তানকে ৯ উইকেটে হারিয়ে সে লক্ষ্য বলতে গেলে পূরণই করে ফেলল স্বাগতিকরা। সঙ্গে নেয়া হল এশিয়া কাপে হারের মধুর প্রতিশোধও।
রোববার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানোয় বড় সংগ্রহ গড়তে পারেনি আফগানিস্তান। ১৭ ওভার ১ বলে ৭২ রানে অলআউট হয়ে যায় এশিয়া কাপে বাংলাদেশকে হারানো দলটি। জবাবে ১২ ওভারে তামিম ইকবালের উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে তামিমের সঙ্গে এনামুলের ৪৫ রানের উদ্বোধনী জুটিতেই বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত হয়ে যায়। সামিউল্লাহ সেনওয়ারির বলে তামিম এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়লে ভাঙে ৭.৪ ওভার স্থায়ী জুটি।
সাকিব আল হাসানকে নিয়ে বাকি কাজটুকু সারতে কোনো সমস্যা হয়নি এনামুলের। সামিউল্লাহর বলে লংঅনের ওপর দিয়ে ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে জয় এনে দেয়া এনামুল অপরাজিত থাকেন ৪৪ রানে। তার ৩৩ বলের ইনিংসে ছিল ৪টি চার ও ৩টি ছক্কা।
প্রথম একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে হেরে গেলেও তাদের বিপক্ষে প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের সবচেয়ে বড় জয় তুলে নিল বাংলাদেশ।
উইকেটের দিক থেকে বাংলাদেশের আগের সবচেয়ে বড় জয়টি ছিল নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে। ২০১২ সালের জুলাইয়ে হেগে স্বাগতিকদের ৮ উইকেটে হারিয়েছিল বাংলাদেশ।
ম্যাচের প্রথম বলেই উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে দুর্দান্ত সূচনা এনে দেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। তার বলটি লংঅফের উপর দিয়ে সীমানা ছাড়া করতে গিয়ে ক্যাচ দেন মোহাম্মদ শাহজাদ। কাভারের দিকে অনেকখানি দৌড়ে ক্যাচটি তালুবন্দী করেন মিডঅফে ফিল্ডিং করা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।
দ্বিতীয় উইকেটে ৩৬ রানের জুটি গড়ে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন গুলবাদিন নাইব ও নাজীব তারাকাই। এ দুজনকেই ফেরানোর কৃতিত্ব সাকিবের।
সাকিবের করা ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে লংঅনে গুলবাদিন নাইবের দেয়া সহজ ক্যাচ হাত থেকে ফেলে দেন সাব্বির রহমান। তবে এর জন্য চার রান খেসারত দিয়েই পার পেয়ে যান তিনি। কারণ পরের বলেই লংঅন থেকে অনেকখানি দৌড়ে তুলনামূলক কঠিন ক্যাচ তালুবন্দী করে নাইবকে বিদায় করেন সাব্বির।
পরের বলেই মিডউইকেটে নাসির হোসেনকে সহজ ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান নাজীব তারাকাই।
পরের ওভারের প্রথম বলে সাব্বিরের সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট হয়ে বিদায় নেন নওরোজ মঙ্গল। ৩৬/১ থেকে আফগানিস্তানের স্কোর পরিণত হয় ৩৬/৪-এ।
দশম ওভারে অতিথি দলের অধিনায়ক মোহাম্মদ নবীকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন বাঁহাতি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক। তার পরের ওভারের শেষ বলে ফরহাদ রেজার সরাসরি থ্রোয়ে রান-আউট হয়ে যান আফগানিস্তানের আরেক ব্যাটিং ভরসা করিম সাদিক।
এক সময়ে ৬৯/৬ রানে পৌঁছানো আফগানিস্তান একশ’ রানের স্বপ্ন দেখছিল। কিন্তু মাত্র ৩ রানে শেষ চার উইকেট হারানোয় টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের সর্বনিম্ন রানের লজ্জা এড়াতে পারেনি দেশটি। তাদের আগের সর্বনিম্ন রান ছিল ৮০, গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কলম্বোয় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে।
১৪ থেকে ১৮ এই চার ওভারে একটি করে উইকেট নেন রাজ্জাক, মাহমুদুল্লাহ, ফরহাদ রেজা ও সাকিব।
৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল বোলার সাকিব। রাজ্জাক ২ উইকেট নেন ২০ রানে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আফগানিস্তান: ১৭.১ ওভারে ৭২ (শাহজাদ ০, নাজীব ৭, নাইব ২১, মঙ্গল ০, নবী ৩, সাদিক ১০, শফিকুল্লাহ ১৬, সামিউল্লাহ ১, দৌলত ১, শাপুর ১, আফতাব ০*; সাকিব ৩/৮, রাজ্জাক ২/২০, ফরহাদ ১/২, মাহমুদুল্লাহ ১/৮, মাশরাফি ১/৮)
বাংলাদেশ: ১২ ওভারে ৭৮/১ (তামিম ২১, এনামুল ৪৪*, সাকিব ১০*; সামিউল্লাহ ১/১৪)
ম্যাচ সেরা: সাকিব আল হাসান

SHARE THIS

0 মন্তব্য(গুলি):