রাজধানীর বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে উপচেপড়া ভিড়


Image result for park in bangladeshগত তিন মাস ধরে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে হরতাল-অবরোধে নাকাল রাজধানীবাসী। গতকাল বুধবার হরতাল না থাকায় এবং আজ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সারাদেশের মানুষ ঘরের বাইরে বের হয়েছিল স্বতস্ফূর্তভাবে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ শহীদ প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে জাতীয় স্মৃতি সৌধে ভিড় করেন। এছাড়াও সাধারণ মানুষ মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাতে ভিড় করেন শহীদ স্মৃতি স্থাপনাগুলোতে।
স্বাধীনতা দিবসের ছুটিতে রাজধানী ও আশপাশের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ছিল উপচেপড়া ভিড়। যার রেশ পড়েছিল শহরের মূল সড়কগুলোতে। মূলত নগরীর প্রায় সব বয়সী মানুষের গন্তব্য ছিল শাহবাগের শিশু পার্ক, রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানা, পুরান ঢাকার ঐতিহাসিক লালবাগ কেল্লা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা।

জাতীয় শিশু পার্কে অভিভাবকদের সাথে আসা এসব শিশুরা আনন্দ উল্লাসে চষে বেড়ায় পার্কজুড়ে। আর রাইডে চড়া তো আছেই। তবে শিশু পার্কের রাইডের সংখ্যা কমে যাওয়ায় হতাশ ছিল অনেকেই। আর এদিন সকল রাইড শিশুদের জন্য সম্পূর্ণ বিনামূল্যে থাকায় রাজধানীর বিভিন্ন স্থান সাধারণ মানুষের ঢল নামে শিশু পার্কে।
শাহবাগের শিশু পার্কটিকে শিশুদের কাছে জনপ্রিয় ছিল টয়-ট্রেন, ফেরিস হুইল স্কেটিং, ফাইটার জেট, মেরি গো রাউন্ড, দোলনা, উড়োজাহাজ, লম্ফঝম্ফ রাইডগুলো। অন্যদিকে শ্যামলী শিশুমেলাও ছিল দর্শনার্থীদের উপস্থিতিতে মুখর। ভিড়ের কারণে অনেকেই রাইডে চড়ার সুযোগ না পেয়েই ফিরে যান।
রিয়াদ হোসেন নামের একজন ব্যবসায়ী দুই শিশু সন্তানসহ জাতীয় শিশু পার্কে এসেছেন। তিনি প্রিয়.কম-কে জানান, নগরীতে অন্য সময় ইচ্ছে থাকলেও সময়ের অভাবে ছেলেদের নিয়ে ঘুরতে বের হওয়া সম্ভব হয় না। তাই আজ আমার স্ত্রী ও ছেলেদের নিয়ে শিশু পার্কে এসেছি।
শিশু পার্কের রেলগাড়িতে চড়ার জন্য দীর্ঘ লাইনে ছোট্ট শিশু জারিফ ও জাওয়াদকে দাঁড়িয়ে ছিলেন তাদের মা নাদিরা। তিনি জানান, সন্তানদের আগ্রহের কারণে তিনি শিশু পার্কে এসে রেলগাড়িতে চড়ার অপেক্ষা করছেন। তিনি প্রিয়.কম-কে বলেন, শিশুদের সংখ্যা বেশি, তুলনায় রাইডের সংখ্যা কম। এজন্য আমাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। তারপরও সন্তানের আনন্দে আমরা কষ্ট ভুলে যাই।
শিশু পার্কের বিভিন্ন রাইডগুলোতে চড়তে শিশুদের নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে অভিভাবকদের। অনেকেই অভিযোগ করেন, রাইডের সংখ্যা কম হওয়াতেই মূলত এমন পরিস্থিতির উদ্ভব। অপরদিকে শিশু পার্কের ভেতরে দর্শণার্থীদের জন্য স্থাপিত টয়লেটে ছিল না পানি আর টয়লেটগুলোর অবস্থাও ছিল শোচনীয়। এতে শিশুদের নিয়ে পার্কে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা পড়েছিলেন বিড়ম্বনায়।
মিরপুর জাতীয় চিড়িয়াখানাও ছিল লোকে লোকারণ্য। বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ নগরজীবনের কাজের ফাঁকে এমনই ছুটির দিনে মুক্তির স্বাদ পেতে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে আনন্দে মেতেছিলেন।
এছাড়া ঢাকা মহানগরী সংলগ্ন ফ্যান্টাসি কিংডম ও নন্দন পার্কে প্রতিদিনই নানা বয়সী মানুষের সমাগম ঘটে। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে বিনোদন কেন্দ্রগুলো সাজানো হয় বর্ণিল সাজে। আর দুপুর গড়াতেই এসব বিনোদন কেন্দ্র শিশু, কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণীসহ নানা বয়সী মানুষের উপস্থিতিতে কানায় কানায় ভরে ওঠে।

SHARE THIS

0 মন্তব্য(গুলি):