আকাশে উড়ল (শাবির তৈরি) বাংলাদেশের প্রথম ড্রোন

drone, drone in bangladesh, drone of bangladesh, technology news
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবি) পরীক্ষামূলকভাবে উড়ান হয়েছে চালকবিহীন বিমান ড্রোন। গতকাল বুধবার বেলা ১টা ২৭ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এ ড্রোনটির উড্ডয়ন হয়। তবে যান্ত্রিক ত্র“টির কারণে ৫০ সেকেন্ড উড়ার পর মাটিতে পড়ে যায় চালকবিহীন বিমান। ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. জাফর ইকবালের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এবং পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রেজুয়ানুল হক নাবিল, মারুফ হোসেন রাহাত ও রবি কর্মকারের প্রচেষ্টায় এ যন্ত্রটি তৈরি করা হয়েছে। প্রথম থেকে এখন পর্যন্ত ড্রোন তৈরি করতে প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। পুরো খরচই বহন করেছেন প্রফেসর ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল।

ড্রোন তৈরি টিমের দলনেতা রেজুয়ানুল হক নাবিল মানবকণ্ঠকে বলেন, যন্ত্রটিতে এখনো ড্রোনের বৈশিষ্ট্য আসেনি। এটাকে এবার ড্রোনে রূপান্তরের পালা চলছে। তবে ড্রোনের জন্য যে ডিসিসি (ড্রোন কন্ট্রোলার সেন্টার) প্রয়োজন তার সফটওয়্যারের কাজ আমরা ইতিমধ্যেই সম্পন্ন করেছি। ডিসিসির সঙ্গে এয়ারক্রাফটের ইন্টারফেসিং সংযুক্ত করা হলে
স্বয়ংক্রিয়ভাবে এবং প্রয়োজনে ডিসিসির অপারেটরের সাহায্যে চালানো যাবে। তিনি আরো জানান, আমরা এ মাসের শুরুতেই ঘোষণা দেই যে এপ্রিলে ম্যানুয়্যাল মোডে উড়াতে পারব। যদিও কাজ শুরুর ২৮ দিনের মধ্যেই গত মঙ্গলবার দুপুরের দিকে পরীক্ষামূলকভাবে প্রায় ১৫ মিনিট প্রথমবারের মতো আকাশে সফলভাবে ড্রোন উড়াতে সক্ষম হই। ড্রোনের ব্যাপারে প্রফেসর ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের দেশে অনেক তরুণ মেধাবী শিক্ষার্থী আছে। সরকার যদি এসব শিক্ষার্থীর বিভিন্ন আবিষ্কার ও গবেষণা কাজের জন্য আর্থিক সহায়তা করে তাহলে শিক্ষার্থীরা দেশের জন্য অনেক কিছু করতে পারবে। আমদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এটা প্রমাণ করেছে।
ড্রোনের ব্যাপারে তিনি জানান, দেশের সার্বিক নিরাপত্তায় ড্রোন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমাদের দেশে যেসব ড্রোন ব্যবহার করা হয় তা অনেক বেশি মূল্য দিয়ে বাইরে থেকে নিয়ে আসা হয়। এসব ড্রোন নষ্ট হলে আবার বাইরে থেকেই ঠিক করাতে হয়, যা খুবই ব্যয়বহুল। কিন্তু আমাদের দেশে তৈরি করা হলে অনেক কম খরচে এবং সমস্যা হলে দেশেই মেরামত করা যাবে।
ড্রোনের কাজ সম্পর্কে নাবিল জানান, এ যন্ত্র আকাশে উড়ন্ত অবস্থায় পাহারা দিতে পারে। দেশের সীমান্তবর্তী এলাকগুলোতে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সহজেই ড্রোন ব্যবহার করা যায়। এছাড়া যুদ্ধক্ষেত্রেও এটি যুদ্ধবিমান হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। এদিকে শাবির এ আবিষ্কারে উজ্জীবিত ও আনন্দিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আকাশে ড্রোন উড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার্থীদের করতালিতে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো মাঠ। শাবির গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী রাজিব বলেন, আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে গর্বিত। একের পর এক আবিষ্কারে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম বাড়ছে।
২০১০ সালে মুঠোফোনে ভর্তি প্রক্রিয়া, গত বছরের ১৪ এপ্রিল দেশের প্রথম বাংলা সার্চ ইঞ্জিন পিপীলিকা, ১৯ জুলাই দেশীয় প্রযুক্তির ট্র্যাকিং ডিভাইস, ৩ ডিসেম্বর অন্ধদের জন্য ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস তৈরি করে শাবি শিক্ষার্থীরা। একের পর এক আবিষ্কার উপহার দিয়ে যাচ্ছে শাবির তরুণ শিক্ষার্থীরা।

SHARE THIS

0 মন্তব্য(গুলি):