জিএসপি : নির্ধারিত সময়ে প্রতিবেদন পাঠালেও পূরণ হয়নি সব শর্ত

জিএসপি : নির্ধারিত সময়ে প্রতিবেদন পাঠালেও পূরণ হয়নি সব শর্ত


যুক্তরাষ্ট্রে জিএসপি সুবিধা ফিরে পেতে ১৬টি শর্তের ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে প্রথম প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছিল গত বছরের নভেম্বর মাসে। তখনই শর্তগুলো পূরণের জন্য ৩১শে মার্চ পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিল এবং অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল ১৫ই এপ্রিলের মধ্যে। বাংলাদেশ সরকার এখন নির্ধারিত সময়ে অর্থাৎ মঙ্গলবার তাদের অগ্রগতি প্রতিবেদন পাঠাচ্ছে। তবে সবক’টি শর্ত এখনও পূরণ হয়নি। জানা গেছে, কারখানার পরিদর্শক নিয়োগ এবং ইপিজেডে ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার দেওয়ার মতো স্পর্শকাতর বিষয়গুলোসহ মোট দশটি শর্ত পুরোপুরি পূরণ করা হয়েছে। এছাড়া দীর্ঘ মেয়াদের কিছু বিষয় রয়েছে। তার মধ্যে কারখানা ভবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে অনেকটা সময় প্রয়োজন। সে বিষয়টি প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। একইসাথে এই শর্ত পূরণের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতিও সরকার দেবে। এছাড়া কারাখানার ভবন সর্ম্পকিত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরও সময় লাগবে বলে প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হবে। এদিকে মূলত পোশাক খাতে শ্রমিক নিরাপত্তার ইস্যুতে গত দশ মাস ধরে বাংলাদেশের জন্য বিশেষ এই রপ্তানি সুবিধা বন্ধ রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। বিদেশী ক্রেতাদের দু’টি ফোরাম অ্যাকোর্ড এবং এ্যালায়েন্সের কারখানা পরিদর্শনের যে কার্যক্রম চালাচ্ছে, তারও উল্লেখ থাকবে প্রতিবেদনে। তবে বাংলাদেশ সরকার মনে করছে, শর্তের ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকার এখনও পর্যন্ত যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, তাতে রাজনৈতিক কোন বিষয় আনা না হলে জিএসপি সুবিধা ফেরত পাওয়া উচিত। সূত্র: বিবিসি
ধুম চলেছে বৈশাখী কেনাকাটায়

ধুম চলেছে বৈশাখী কেনাকাটায়

বাঙালি জাতির অন্যতম উৎসব পহেলা বৈশাখের। বাংলা নববর্ষ ১৪২১-কে বরণ করে নিতে এরই মধ্যে নানা আয়োজনে মেতে উঠেছে দেশবাসী। কর্ম ব্যস্ততার শহর রাজধানীবাসীর মাঝেও নেমে এসেছে বর্ষবরণের আমেজ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রার সকল আয়োজন চলছে ধুম গতিতে। গত এক সপ্তাহ থেকেই বৈশাখী সাজে সেজে রয়েছে রাজধানীর মার্কেটগুলো।
বাংলা সংস্কৃতির অন্যতম উৎসব পহেলা বৈশাখ। বৈশাখের ছোঁয়া লেগেছে নগরের বিপনীবিতানগুলোয়ও। উৎসব প্রিয় তরুণ-তরুণীসহ বিভিন্ন বয়সীদের পদচারণায় মুখরিত বিপনীবিতানগুলো। বৈশাখে নিজেকে একটু ভিন্ন আঙ্গিকে সাজাতে কেনাকাটা সাড়তে ভিড়ছেন সকল শ্রেণীর মানুষজন।
রাজধানীর নিউ মার্কেট, আজিজ সুপার মার্কেট, বসুন্ধরা সিটি, যমুনা ফিউচার পার্কসহ সকল শপিং মলগুলোতে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটায় রীতিমত ভিড় জমিয়েছে নগরবাসী। বিশেষ করে বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত ক্রেতা সমাগম থাকে চোখে পড়ার মতো।
বৈশাখে মেয়েদের লাল-সাদা শাড়ির পাশাপাশি রয়েছে নানা ডিজাইনের নজর কাড়া পোশাক। এছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বসেছে বাহারি চুড়ি-মালার পসরা। বাঙালি ললনারা বৈশাখের পোশাকের সাথে মিলিয়ে কিনছে রকমারি সব মালা, চুড়ি, কানের দুল, টিপ, চুলের ফিতাসহ সাজের নানা সামগ্রী।
চুড়ি মেলায় আসা আফসানা রাহমান জানান, “বৈশাখের শাড়ি কেনা শেষ, শাড়ির সাথে মিলিয়ে চুড়ি আর মালা কিনতে এসেছি। শপিং মলের আশে পাশেই চুড়ি-মালার দোকান বসায় কেনাকাটা অনেক সহজ হয়ে গেছে। দেশীয় ঐতিহ্যকে নিজের মধ্যে ধারণ করে বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নিতে কোন কিছুর অপূর্ণতা রাখতে চাই না।”
বৈশাখের রং লেগেছে ছেলেদের মনেও। পিছিয়ে নেই কেনাকাটায়ও। পছন্দের পাঞ্জাবি, ফতুয়া অথবা টি-শার্ট কিনে নিচ্ছেন বৈশাখকে বরণ করতে।
রাজধানীর ধানমণ্ডির সানরাইজ প্লাজায় বৈশাখের পোশাক কিনতে আসা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র সাইফ নাহিদ জানান, “বৈশাখকে কেন্দ্র করে অনেক রুচিশীল পোশাক এসেছে বাজারে। তবে ক্রেতাদের চাহিদা বেশি থাকায় পন্যের দাম ছাড়ছে না বিক্রেতারা। হাজার টাকার পাঞ্জারি বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ টাকায়। তবুও কিছু করার নেই, নববর্ষ বলে কথা, নতুন কাপড় চাই-ই-চাই।”
দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভাল থাকায় বেচাকেনা ভাল হচ্ছে বলে সন্তুষ্ট ব্যবসায়ীরাও। জমজমাট বেচা কেনা করছে পোশাক বিক্রেতারা। গেল বছরের শেষ দিকের হরতাল-অবরোধের ক্ষতি অনেকটাই পুষিয়ে যাবে বলে মনে করছেন পোশাক তারা।
রাপা প্লাজার একজন পোশাক ব্যবসায়ী জানান, “অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের বেচাকেনা ভাল। আর বর্তমানে দেশের পরিস্থিতি মোটামুটি ভাল থাকায় ক্রেতা সমাগম বেশি এবং আমরা বেশ আশাবাদী।”
এদিকে বৈশাখকে বরণ করে নিতে প্রতিবছর চারুকলা প্রাঙ্গণ থেকেই বের হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। আর এই মঙ্গল শোভাযাত্রাকে সফলের প্রস্তুতি নিতেই চারুকলায় এখন চলছে মহাযজ্ঞ। নবীন-প্রবীণ শিক্ষার্থীরা দিনরাত পরিশ্রম করছেন মঙ্গল শোভাযাত্রাকে সফল করতে। চারুকলার ফটকে পা রাখলেই মঙ্গল শোভাযাত্রার কর্মযজ্ঞ চোখে পড়বে।
বদলে যাচ্ছে ঢাকা

বদলে যাচ্ছে ঢাকা

যানজটমুক্ত করে ঢাকাকে অত্যাধুনিক রাজধানী হিসাবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। এর মূল লক্ষ্য, যানজটের পাশাপাশি জলাবদ্ধতা, নদী দূষণ, আবাসন সমস্যা, বিদ্যুত্-গ্যাস-পানি সংকট নিরসন করে ঢাকাকে নাগরিক সুবিধা সম্বলিত পরিচ্ছন্ন শহর হিসাবে গড়ে তোলা। এজন্য রাজধানীর ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার মাথায় রেখে নেয়া হয়েছে বহুমুখী প্রকল্প। এর সঙ্গে প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবেও ঢাকা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠার বিষয়টিও বিবেচনায় নেয়া হয়েছে।
ঢাকাকে বদলে দেয়ার মহাপরিকল্পনায় জানা গেছে, আসন্ন জুনের মধ্যে শুরু হচ্ছে বহুল প্রত্যাশিত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ। ঢাকার অন্যতম ব্যস্ত ও ভিআইপি সড়ক শাহবাগ-রূপসী বাংলা হোটেল (প্রাক্তন শেরাটন)-বাংলামটর-সোনারগাঁও ইন্টারসেকশনে আন্ডারপাস নির্মাণের প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬৫ কোটি টাকা। নির্মিতব্য মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ আগামী বছরের ডিসেম্বর নাগাদ শেষ হওয়ার কথা।
জনবসতিপূর্ণ পুরান ঢাকার যানজট নিরসন ও উন্মুক্ত স্থানের সংস্থান করার লক্ষ্যে নেয়া হয়েছে আরবান রিন্যুয়াল প্রকল্প। গাজীপুর থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেন নির্মাণের কাজ গত বছরের ৩১ অক্টোবর শুরু হয়েছে। এছাড়া বর্তমানে খিলগাঁও ফ্লাইওভারের সায়েদাবাদ প্রান্তে ৬২০ মিটার দীর্ঘ আরেকটি লুপ নির্মাণের কাজ চলছে, যা আগামী বছরের জুন নাগাদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে বলেছেন, এসব কার্যক্রম ও প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে ঢাকার যানজটের তীব্রতা কমে যাবে। যার ফলে ঢাকাকে একটি অত্যাধুনিক রাজধানী হিসাবে গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে ঢাকা শহরের জনসংখ্যা ছিল ২ লাখ ৮০ হাজার। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী বর্তমানে এ সংখ্যা ১ কোটি ৬০ লাখ। যা ১৯৭২ সালের তুলনায় প্রায় ৬০ গুণ বেশি। আগামীতে জ্যামিতিক হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনায় রেখেই অত্যাধুনিক রাজধানী গড়ার পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শুরু হয়ে কুড়িল, বনানী, মহাখালী, তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর, সায়েদাবাদ ও যাত্রাবাড়ী হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। এর মূল অংশের দৈর্ঘ্য হবে ৪৭ কিলোমিটার। বর্তমানে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রথম পর্যায়ের ভূমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম চলছে।
এক্সপ্রেসওয়ের পাইল ড্রাইভিং শুরু হলে ভূমি অধিগ্রহণে জটিলতা দেখা দেয়। যার কারণে গত বছরের মে মাসে অনুষ্ঠিত এক সভায় ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ব্যক্তি মালিকানাধীন ভূমি অধিগ্রহণ যথাসম্ভব পরিহারের লক্ষ্যে এই এক্সপ্রেসওয়ের এলাইটমেন্ট ও ডিজাইন সংশোধনের সিদ্ধান্ত হয়। পরে ডিসেম্বর বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ইটালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে সরকারের সংশোধিত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
বিমানবন্দর-গাজীপুর বিআরটি লেন
গাজীপুর থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেন নির্মাণের ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৩৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। এরমধ্যে ৬৫৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সাড়ে ৪ কিলোমিটার এলিভেটেড অংশ সেতু বিভাগ অধীনস্থ সংস্থা 'বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ' বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্পটি ইতিমধ্যে একনেকের অনুমোদন পেয়েছে। উভয়দিকে ঘণ্টায় ৪০ হাজার যাত্রী পরিবহনে সক্ষম বিআরটি বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে গতবছরের ৩১ অক্টোবর। বিআরটি নির্মাণ, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য শতভাগ সরকারি মালিকানায় 'ঢাকা বিআরটি' গঠন করা হয়েছে।
ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চন্দ্রা পর্যন্ত প্রায় ৪২ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে প্রাক-সম্ভাব্যতা সম্পন্ন হয়েছে। যার প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬ হাজার ২৫০ কোটি টাকা। এটি পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশীপ বা পিপিপির ভিত্তিতে নির্মাণে বিনিয়োগকারী নিয়োগে 'এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট' (ইওআই) আহ্বান করা হলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সাতটি প্রতিষ্ঠান প্রস্তাব দাখিল করে। অন্যদিকে একটি চীনা সরকারি প্রতিষ্ঠান জি-টু-জি ভিত্তিতে নির্মাণে আগ্রহ দেখালে বাংলাদেশ সরকার এতে সম্মতি দেয়। সরকার আশা করছে, এই এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজও যথাসময়ে শুরু করা সম্ভব হবে।
মেট্রোরেল প্রকল্প
উত্তরা তৃতীয় ফেজ থেকে মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (মেট্রোরেল) বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে গতবছরের নভেম্বরে। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ২২ হাজার কোটি টাকা। এটা হবে ১৬টি স্টেশনবিশিষ্ট। এতে উভয়দিকে ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব হবে। মেট্রোরেল নির্মাণ, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সরকার 'ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড' (ডিএমটিসিএল) গঠন করেছে।
মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার
ঢাকা মহানগরীর যানজট নিরসনে মগবাজার, মৌচাক, মালিবাগ এলাকায় চার লেন বিশিষ্ট ৮ দশমিক ২৫ কিলোমিটার 'মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার' নির্মাণের কাজ চলছে। এই ফ্লাইওভারটি সাতরাস্তা, এফডিসি, মগবাজার, মৌচাক, শান্তিনগর, মালিবাগ ও চৌধুরীপাড়াসহ মোট ৮টি মোড় অতিক্রম করবে। এছাড়া মগবাজার ও মালিবাগ রেলক্রসিং অতিক্রম করবে এটি। ২০১৫ সালের ডিসেম্বর নাগাদ ফ্লাইওভারটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
এসব উল্লেখযোগ্য প্রকল্প ছাড়াও রাজধানীর উন্নয়নে যোগাযোগ খাতে আরো বেশকিছু প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- ৪১ কোটি টাকা ব্যয়ে মিরপুর-সেনানিবাস বাইপাস নির্মাণ, ৪৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে মিরপুর দারুস সালাম সড়ক (আনসার ক্যাম্প) থেকে কচুক্ষেত পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ, ১২০ কোটি টাকা ব্যয়ে এ্যাসফল্ট প্ল্যান্টের মাধ্যমে ঢাকা শহরের ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার উন্নয়ন, ১ হাজার ৩০৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নগর অঞ্চল উন্নয়ন, ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে বিরুলিয়া-আশুলিয়া সড়ক নির্মাণ, ১০৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ডেমরা-আমুলিয়া-রামপুরা (শেখের জায়গা সংযোগ) সড়ক নির্মাণ, ৮৯ কোটি টাকা ব্যয়ে শিরনীর টেক থেকে গাবতলী পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ এবং ৭১ কোটি টাকা ব্যয়ে গাবতলী-সোয়ারীঘাট (বাদামতলী) সড়ককে চার লেনে উন্নীতকরণ।
ভাড়াটে সন্তানে নগরীতে চলছে ভিক্ষাবৃত্তির ব্যবসা!

ভাড়াটে সন্তানে নগরীতে চলছে ভিক্ষাবৃত্তির ব্যবসা!

নগরীতে ভাড়াটে সন্তান দিয়ে ভিক্ষাবৃত্তির ব্যবসা বেশ জমজমাট। চলতে ফিরতে হরহামেশাই চোখে পড়ে- এক পাল ছেলেপেলে নিয়ে হাজির জনম দুঃখী মা, বাবা, ভাই অথবা বোন। বড় পরিবার, উপার্জনের পথরুদ্ধ- ইত্যাদি গল্প শুনিয়ে মানুষের হৃদয়ে করাঘাত করে এরা নিজেদের ঝুলি ভরে।
মিলন ৯ বছরের শিশু। রাস্তার মোড়ে ভাড়াটে শিশু কোমরে জড়িয়ে তাকে হাত বাড়িয়ে দিতে হয়। সামনে বা পেছনে থাকে কথিত মা। তার কোলেও নিস্তেজ শিশু। সবাই মিলে ট্রাফিক সিগন্যালে ভিক্ষা করছে। দেখে মনে হবে বাবাহীন কোনো পরিবার। কিন্তু ওরা আসলে কেউ আপন নয়। সবাই ভাড়াটে। ওদের কাজই এখন ভিক্ষাবৃত্তি। ভিক্ষাবৃত্তির জগতে শিশু ভাড়া পাওয়া যায়। ভাড়ায় আসে মা এবং আট-নয় বছরের সন্তান। ভাড়াটেরা মিলে হয়ে যায় এক পরিবার। চলে ভিক্ষাবৃত্তি।
রাজধানী ঘুরে দেখা গেছে, ভাড়াটে সন্তান দিয়ে ভিক্ষাবৃত্তির ভয়াবহ দৃশ্য। ভাড়াটে শিশু নিয়ে ভিক্ষার পেছনে আছে শক্তিশালী একটি চক্র। এ চক্রটি শিশু চুরি থেকে শুরু করে দরিদ্র, স্বামী পরিত্যক্তা ও মাদকাসক্ত মায়েদের সন্তান ভাড়া নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি চালাচ্ছে। দিন শেষে শিশু ভাড়া হিসেবে দেড় থেকে দু’শ টাকা আর কিশোরী মায়ের জন্য কিছু দিয়ে বাকি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ওই চক্রটি। বিনা শ্রম আর পুঁজিতে চলছে এই ব্যবসা। আইন-শৃংখলা বাহিনী ও ট্রাফিক পুলিশের চোখের সামনে শিশুদের দিয়ে এমন নির্মম ব্যবসা চালালেও কেউ কিছু বলে না। কোনো এক অদৃশ্য কারণে এসব সংস্থার সদস্যরা নিশ্চুপ।
মাত্র ১২ বছর বয়সে বিয়ে হয় মিতুর। দুই বছরের মাথায় বিয়েটা ভেঙে যায়। কিন্তু ততদিনে কোলে চলে এসেছে একটি মেয়ে শিশু। জীবনের টানে একদিন সন্তান নিয়ে মিতু চলে আসে রাজধানীতে। তারপর আরও দু’বার বিয়ে করে সংসারী হওয়ার চেষ্টা করেছে সে। বিয়ে টেকেনি কিন্তু কোলে এসেছ আরো দু’টো সন্তান। সন্তান ভাড়া দিয়ে তার এখন প্রতিদিনের আয় ৬০০ টাকা। এই টাকায় মিতু মাদক সেবন করছে। মিতু আরও সন্তান চায়। প্রতি সন্তানে আয় ২০০ টাকা। যা দিয়ে পাওয়া যাবে আরও মাদক, আরও নেশা।
মানবাধিকার নেত্রী অ্যাডভোকেট এলিনা খান বলেন, এমন নিষ্ঠুরতা মানবাধিকার শুধু লংঘনই হচ্ছে না, পুরো জাতি ও সমাজ অপরাধী হচ্ছে। এমন বর্বরতা বন্ধ করা জরুরি।
জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক ক্লিনিক্যাল ও ইন্টারন্যাশনাল কার্ডিওলজির ডা. তৌফিকুর রহমান ফারুক বলেন, অচেতন অবস্থায় এসব শিশুর মৃত্যু হতে পারে। চেতনানাশক ওষুধ খাওয়ানোর ফলে নিমোনিয়া, লিভার নষ্ট থেকে শুরু করে নানা ধরনের রোগ হতে পারে।
সূত্র: দৈনিক যুগান্তর
এবার প্রেমের ফাঁদে ফেলে বাণিজ্য!!!

এবার প্রেমের ফাঁদে ফেলে বাণিজ্য!!!

বাণিজ্যের কত প্রকারই না ধরণ! কেউ রূপের ফাঁদে ফেলে মানুষ ঠকায়, আবার কেউ প্রেমের ফাঁদে ফেলে পকেট ভরে। কমার্শিয়াল এই যুগে মানুষের দেহ-মন সবই এখন অর্থ উপার্জনের হাতিয়ার। আর এর সাথে যখন যুক্ত হয় কূটিল মস্তিষ্ক, তখন তো আর উপায়ই থাকে না!
মেয়েটার নাম, দোলা আক্তার। বয়স মাত্র ২০ বছর। এই বয়সে যখন তার অনাগত জীবন স্বপ্নে বিভোর থাকার কথা, ঠিক সে সময়ই সে মেতে উঠেছিল প্রতারণার ছোবল দিতে। মোবাইল ফোন নম্বর সংগ্রহ করে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সে গড়ে তুলত প্রেমের সম্পর্ক। দেখা করার নামে নির্ধারিত ফ্ল্যাটে নিয়ে কৌশলে ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে আপত্তিকর ছবি তুলে রাখত দোলা এবং তার সঙ্গীরা। পরে ওই ছবি দেখিয়ে ব্যবসায়ীর কাছ থেকে দাবি করা হতো লাখ লাখ টাকা। টাকা দিতে আপত্তি করলেই গ্রেফতার এবং সংবাদ প্রচারের ভয়। ভুয়া প্রেমিকা, পুলিশ এবং সাংবাদিকের সমন্বয়ে গড়ে তোলা ওই প্রতারক চক্রটি প্রেমের ফাঁদে ফেলে অনেক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা।
প্রতারিত এক ব্যবসায়ীর অভিযোগের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার রাজধানীর মিরপুর পাইকপাড়ার একটি বাসা থেকে ওই চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ওয়্যারলেস সেট, হ্যান্ডকাফ ও একটি ডিজিটাল ক্যামেরা। ডিবির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেনের তত্ত্বাবধানে গ্রেফতার অভিযান চালান ডিবির সহকারী পুলিশ কমিশনার রহমত উল্লাহ্ চৌধুরী।
গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে- দোলা আক্তার, আবু তালেব, ভুয়া ডিবি ইন্সপেক্টর আজাহার উদ্দিন খান, ভুয়া ডিবির সাব-ইন্সপেক্টর মো. মোস্তফা, ভুয়া সাংবাদিক শামীম সিকদার ও সালমা বেগম। প্রতারক চক্রটির মূল হোতা আবু তালেব নিজেকে ডিবির সহকারী কমিশনার পরিচয় দিত।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ২৬ আগস্ট লন্ডন প্রবাসী এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে দোলার আপত্তিকর ছবি তোলে। পরে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তারা ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ২৪ লাখ টাকা আদায় করে। গত ২০ ফেব্রুয়ারি এক উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তার কাছ থেকে একই ভাবে ১৭ লাখ টাকা আদায় করে।
সর্বশেষ মিরপুরের এক রাজনৈতিক নেতার কাছ থেকে তারা ৫ লাখ টাকা আদায় করে। ওই নেতার মিরপুর থানায় দায়ের করা মামলার সূত্র ধরে প্রতারকদের গ্রেফতার করা হয়।
সূত্র: দৈনিক সমকাল
এই গরমে পানিশূন্যতা দূর করবে যে খাবারগুলো

এই গরমে পানিশূন্যতা দূর করবে যে খাবারগুলো

বৈশাখ আসার আগেই প্রচন্ড গরম পড়ে গিয়েছে। দিনের বেলায় বেশ চড়া রোদ থাকে বাইরে। আর তাই ঘরের বাইরে বের হলেই ঘামে ভিজে যায় শরীর। ফলে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। প্রচন্ড গরমে ঘাম হলে পান করা উচিত প্রচুর পানি। সেই সঙ্গে খাওয়া উচিত বিশেষ কিছু খাবার যেগুলো শরীরের পানিশূন্যতা দূর করে। আসুন জেনে নেয়া যাক ৫টি খাবার সম্পর্কে যেগুলো গরমের সময় পানিশূন্যতা দূর করতে সহায়তা করে এবং শরীরকে সতেজ রাখে।

শসা

গরমের দিনে শসা খেলে প্রান জুড়িয়ে যায়। আর তা যদি হয় ঠান্ডা তাহলে তো কথাই নেই। শসায় আছে ৯৭% পানি যা গরমের সময়ে শরীরের পানিশূন্যতা দূর করতে সহায়তা করে। তাই গরমের দিনে পানিশূন্যতা দূর করার জন্য সালাদে কিংবা রান্নায় প্রচুর শসা খাওয়ার অভ্যাস করুন।

টমেটো

গরম হোক কিংবা শীত, পুষ্টিবিদরা সবসময়েই টমেটো খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। টমেটোতে আছে প্রচুর পুষ্টি উপাদান। সেই সঙ্গে আছে প্রচুর পরিমাণে পানি। তাই প্রচন্ড গরমে যখন ঘামের কারণে পানিশূন্যতা দেখা দেয় তখন প্রচুর টমেটোর সালাদ, জুস কিংবা রান্নায় টমেটো খেলে পানিশূন্যতা দূর করা সম্ভব।

তরমুজ

গরমের সময় প্রচন্ড ঘাম হয়। আর এই ঘামের কারণে হয়ে যায় পানিশূন্যতা। এই সময়ে পানিশূন্যতা দূর করতে তরমুজের কোনো বিকল্প নেই। তরমুজে আছে প্রচুর পরিমাণে পানি ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান যা গরমের সময় শরীরকে দেয় প্রশান্তি।

কামরাঙ্গা

কামরাঙ্গাও একটি রসালো ফল। সেই সঙ্গে এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। গরমের সময় প্রচুর কামরাঙ্গা খেলে শরীর থাকবে সুস্থ। সেই সঙ্গে দূর হবে শরীরের পানিশূন্যতা ও ক্লান্তি।

পেঁপে

পেঁপে একটি রসালো ও সুস্বাদু ফল। পেঁপেতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ ও সি। এছাড়াও পেঁপেতে আছে প্রচুর পরিমাণে পানি। তাই গরমের সময় পেপে খেলে প্রশান্তির অনুভব হয়। সেই সঙ্গে নিয়মিত পেঁপে খেলে দূর হয় পানিশূন্যতা।
আসছে বৈশাখ, চলছে মঙ্গল শোভাযাত্রার মহাযজ্ঞ

আসছে বৈশাখ, চলছে মঙ্গল শোভাযাত্রার মহাযজ্ঞ

চৈত্রের প্রখর রোদের নিচে মুহূর্তের জন্য দাঁড়িয়ে থাকাও কঠিন, যেন শরীরটাই ঝলসে যাচ্ছে! তপ্ত রোদের তেজে যেন ঝলসে ওঠছে পিচ ঢালা পথ। হঠাৎ করেই উড়ে এসে জুড়ে বসা দমকা হাওয়ায় উড়ছে ধুলোবালি। কোথা থেকে নীলাকাশে ভেসে আসে মেঘের ভেলা। আর বিদ্যুতের আচমকা ডাক-চিৎকারে ভিজে যায় বাংলাদেশ! বাংলার এমন প্রাকৃতিক চিত্রই বলছে, বৈশাখের বেশি দেরি নেই। আসছে বৈশাখ শত ব্যস্ততার এই নগরেও। বৈশাখ যতটাই এগিয়ে আসছে আর ততোটাই বস্ততা বাড়ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের।
বৈশাখকে বরণ করে নিতে প্রতিবছর চারুকলা প্রাঙ্গণ থেকেই বের হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। আর এই মঙ্গল শোভাযাত্রাকে সফলের প্রস্তুতি নিতেই চারুকলায় এখন চলছে মহাযজ্ঞ। নবীন-প্রবীণ শিক্ষার্থীরা দিনরাত পরিশ্রম করছেন মঙ্গল শোভাযাত্রাকে সফল করতে। চারুকলার ফটকে পা রাখলেই মঙ্গল শোভাযাত্রার কর্মযজ্ঞ চোখে পড়বে।
চারুকলা প্রাঙ্গণে এখন চলছে উৎসব উৎসব রব। এখানে কেউ জলরঙে ছবি আঁকছেন, কেউ সরায় ফুটিয়ে তুলছেন বাহারি দৃশ্য, আবার কেউ মুখোশ তৈরি করছেন। কেউ কেউ এসব সাজানোর প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখা এসব শিল্পকর্ম বিক্রির কাজ করছেন কেউ কেউ। শোভাযাত্রাকে বৈচিত্র্যময় করে তুলতে প্রতিবছরের মতো এবারও থাকছে রাজা-রানির মুখোশ, বানর, পাখিসহ বিভিন্ন জীবজন্তুর লোকজ অবকাঠামো।
এবার মঙ্গল শোভাযাত্রায় একটি বৃহৎ হাঁসকে প্রাধান্য দিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে মঙ্গল শোভাযাত্রার কাজ। তবে হাঁসকে প্রাধান্য দেওয়া হলেও বরাবরের মতো বাংলা সংস্কৃতির সব কিছুই থাকছে এবারের আয়োজনে। সরাচিত্র, খেলনা, পুতুল, মা ও শিশু, বাঘ, হরিণ, মাছ, মাছের ঝাঁক, মুখোশ, হাত পাখা, শখের হাঁড়ি, বিড়াল, লক্ষ্মী পেঁচাসহ আরও নানা ধরনের শিল্পকর্ম থাকছে। সারা বিশ্বের বাঙালির কাছে হাজার হাজার বছরের পুরনো গৌরবোজ্জল বাংলা সংস্কৃতি তুলে ধরার প্রত্যয়ে প্রতিদিন চারুকলার শিক্ষার্থীরা এখন দিনরাত পরিশ্রম করছেন।
বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রাকে সফল করতে আয়োজকদের বেশ খরচ হয়। অর্থসংস্থানের জন্য চারুকলায় এখন উন্মুক্ত শিল্পকর্ম প্রদর্শনী চলছে। প্রাঙ্গণে আঁকা হচ্ছে ছবি। রঙিন হয়ে উঠছে সরা, যাতে চিত্রিত হচ্ছে বাংলার লোকজ মোটিভ। এসব শিল্পকর্ম ঝুলিয়ে রাখা হচ্ছে দেয়ালে। নবীন শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি দেয়ালে উপস্থাপিত হয়েছে চারুকলার প্রবীণ শিক্ষার্থীদের কাজও। রয়েছে শিক্ষকদের শিল্পকর্মও।
বিক্রি করার জন্য শিল্পকর্মগুলোর মধ্যে পাখির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ টাকা থেকে ১,০০০ টাকা, সরার দাম ২০০ থেকে ১,০০০ টাকা, জল রঙে আঁকা বিভিন্ন চিত্রকর্মের দাম ধরা হয়েছে ৩,০০০ টাকা থেকে ১০,০০০ টাকা এবং বিভিন্ন মুখোশের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০০ টাকা থেকে ৮,০০০ টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া হাত পাখা, বিভিন্ন শো-পিসও বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। যার দাম ১০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত।
মাটির সরাকে রঙিন করে তুলছিলেন মাস্টার্সের শিক্ষার্থী তানিয়া। তিনি বলেন, ‘চারুকলার নানা আয়োজনের বড় আয়োজন এই বৈশাখের মঙ্গলশোভাযাত্রা। প্রতি বছর চারুকলা থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়। বাঙালির ঐতিহ্য এই শোভাযাত্রার কাজ করতে পেরে গর্বিত বোধ করি। ভর্তি হওয়ার পর থেকেই প্রতি বছর মঙ্গলশোভাযাত্রার কাজ করি।’
রাজা-রানির মুখোশ তৈরি করতে যে পেপার ম্যাশ প্রয়োজন, তাই বানাচ্ছিলেন চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা। মাটি দিয়ে এই পেপার ম্যাশ তৈরি করতে হয়। রাজা-রানির মুখোশ মঙ্গল শোভাযাত্রার বৈচিত্রময় করে তোলে।
বৈশাখ আসার আগেই চারুকলা অনুষদের সামনের দেয়ালের বাইরের দিকটাও সাজবে নতুন সাজে। আবহমান বাংলার দৃশ্য ফুটে উঠবে তাতে। চারুকলা অনুষদের সাজ সাজ রব জানান দিচ্ছে, খুব দূরে নয় বৈশাখ।
গাছে গাছে আমের মুকুল, কোকিলের কুহুতান আর গাছের নতুন কচি পাতায় ঋতুরাজ বসন্ত বিদায় নিবে আর মাত্র কয়েক দিন। বাংলা নতুন বছরের প্রথম দিনের অপেক্ষায় এখন দিন গুণছে বাঙালিরা। বৈশাখও যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে সবাইকে। বৈশাখের প্রথম দিনে নগরজুড়ে থাকে উৎসবের জোয়ার।
বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে ঢাকা

বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে ঢাকা

দিন যত যাচ্ছে রাজধানী ঢাকা ক্রমেই বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। একটি মেগাসিটির যে নাগরিক সুবিধা থাকার কথা তা পূরণ হচ্ছে না। এ কারণে সেবাপ্রতিষ্ঠানগুলো তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারছে না। দিন দিন নাগরিক সেবার মান কমেই যাচ্ছে। নগরবিদেরা নিয়ন্ত্রণহীন বাড়িভাড়া, বিশুদ্ধ পানির সংকট, গ্যাস সংকট, অপরিচ্ছন্ন নালা-নর্দমা ও মশার উপদ্রবকে এ মুহূর্তে নাগরিকদের জন্য পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
কথায় কথায় নগরে ঘর-বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি এখন রাজধানীবাসীর কাছে নিত্যদিনের যন্ত্রণার মতো হয়ে গেছে। বছরের শুরু ও মাঝামাঝিতে আগাম নোটিস ছাড়াই ভাড়া বৃদ্ধি করা হচ্ছে। মানা হচ্ছে না- ডিসিসি কর্তৃক বাড়িভাড়ার নির্দেশনা। এমনকি ব্যাপারটি সম্পর্কে জানেন না অধিকাংশ বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়া। অন্যদিকে, বাড়িভাড়া বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯১ ও বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ, ১৯৬৪-এর প্রয়োগ হচ্ছে এমন নজিরও নেই।
রাজধানীতে দিন দিন তীব্র হচ্ছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। গরম বৃদ্ধির সঙ্গে এ সংকট আরও বাড়ছে। ওয়াসার ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, রাজধানীতে দৈনিক পানির চাহিদা ২৫০ কোটি লিটার। কিন্তু তারা সরবারহ করছে ২০০ কোটি লিটার। পানি সংকটের কারণে প্রতিদিনই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের ড্রামে করে, ওয়াসার গাড়িতে ভরে এবং ওয়াসার পানির পাম্পে গিয়ে দীর্ঘ লাইনে পানি সংগ্রহ করতে দেখা যায়। তা ছাড়া এ সময় প্রতি বছর বিদ্যুৎ সংকটের কারণে পানিস্বল্পতা তৈরি হয়।
আগে শীতে গ্যাস সংকট থাকলেও এখন গরমেও নগরীর গ্যাস সংকট কাটছে না। গ্যাসের অভাবে আবাসিক গ্রাহক ও শিল্প কারখানার মালিকরা বিপাকে পড়েছেন। তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চাহিদার তুলনায় গ্যাসের সরবরাহ কম। বর্তমানে ঢাকা মহানগর এলাকায় গ্যাসের চাহিদা ১ হাজার ৯০০ মিলিয়ন ঘনফুট। অথচ সরবরাহ করা হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। এ ছাড়া গ্যাসের পুরনো লাইনের ত্রুটি ও অবৈধ সংযোগের কারণে বিদ্যমান গ্যাস সংকট থেকেই যাচ্ছে।
সন্ধ্যা নামতেই নগরীর গৃহিণীদের মধ্যে ভর করে মশা আতঙ্ক। শুধু সন্ধ্যা নয়, এখন সারাদিনই শশার উপদ্রব বলা চলে। নগরবাসীর অভিযোগ, সরকারের সেবাদানকারী সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর মশা নিয়ন্ত্রণে দৃশ্যত কোনো উদ্যোগ না থাকায় নগরজুড়ে এখন মশার উপদ্রব।
অপরিকল্পিত নগরায়ণের ফলে ঢাকার ড্রেন ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাপনারও বেহাল দশা। কিন্তু ঢাকা ওয়াসা, সিটি করপোরেশন সে অনুপাতে নাগরিকদের স্যুয়ারেজ লাইন ও নালা-নর্দমার সুবিধা দিতে পারছে না। পরিবেশবাদী সংগঠন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) তথ্যে, ঢাকা শহরের গৃহস্থালির ময়লা-আবর্জনাসহ অন্যান্য বর্জ্য পদার্থের ৬০ শতাংশ সরানোর দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। বাকি ৪০ শতাংশ প্রতিষ্ঠানটি জনবলস্বল্পতাসহ নানাবিধ কারণে সরাতে অক্ষম।
সূত্র: দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন
নিজেই শাক-সবজী চাষ করছেন সালমান!

নিজেই শাক-সবজী চাষ করছেন সালমান!


সুস্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে তিন বছর আগে ছেড়েছেন ধূমপান এবং মদপানের মতো বদ অভ্যাসগুলো। সেই ধারাবাহিকতায় এবার নিলেন আরেকটি পদক্ষেপ। আর তাতেই বনে গেলেন খবরের শিরোনাম।
নিজের ফার্ম হাউজে এই তারকা চাষ করছেন নানা জাতের শাক-সবজি। আর সেই শাক-সবজিগুলো বাজার পর্যন্ত না গেলেও নিজের পরিবারে সদস্যদের জন্য নিজেই চাষ করেন।
এই তারকা বলেন, বাজারে এখন যে সব শাক-সবজি পাওয়া যায় তাদের বেশির ভাগই ফরমালিনে পরিপূর্ণ। আর তাই নিজের জমিতে চাষ করে সেই শাক-সবজিই রান্না করা হয় এবং এগুলত কোন রকম কীটনাশক ব্যবহার করা ছাড়াই বেশ ভালো ফলন হচ্ছে।
রূপের ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইল।

রূপের ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইল।

 
 রূপ-যৌবন তাদের পুঁজি। আর তা দিয়েই ফাঁদে ফেলা তাদের পেশা। প্রথমে বিত্তশালী কারো সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক। পরে তাকে নিজের বাসায় নিয়ে যাওয়া। চলে দৈহিক মেলামেশা। সুযোগ বুঝে একদিন কৌশলে বাসায় আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবি। কখনো বা গোপন ক্যামেরায় ভিডিও করে তা দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করা। মুক্তিপণ বা ব্ল্যাকমেইল করে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় হলেই ছেড়ে দেয়া হয় ভুক্তভোগীদের। লোক-লজ্জার ভয়ে কেউ এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপও নিতে চান না। এই সুযোগই কাজে লাগাতো তারা। গতকাল পুলিশ-র‌্যাবের পৃথক অভিযানে এমন দুটি চক্রকে আটক করা হয়েছে। আটকের পর তারা নিজেরাই এসব অপকর্মের কথা স্বীকার করেছে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা সূত্র জানায়, শুক্রবার উজ্জ্বল নাগ (৪৩) নামে এক গার্মেন্ট কর্মকর্তাকে এভাবেই দেহের ফাঁদে ফেলে আটকে রাখে একটি চক্র। এরপর তার কাছে প্রথমে ৩০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। এত টাকা দেয়ার সামর্থ্য নেই জানালে শেষে ১০ লাখ টাকায় রফা হয়। এর মধ্যে এক বন্ধুর কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা নিয়েও যায় চক্রটি। পরে পরিবার ও গার্মেন্ট কারখানার পক্ষ থেকে পৃথক দুটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। একই সঙ্গে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানানো হলে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল তিন দিনের মাথায় উজ্জ্বল নাগকে বাসাবোর কদমতলার একটি বাসা থেকে উদ্ধার করেন। এসময় আটক করা হয় রোজী আক্তার তানহা (২৩) ও তার চার সহযোগীকে। অন্যরা হলো- নিলয় আহমেদ রাজু (২৫), ইসমাইল (১৮), মিলন (১৮) ও ইব্রাহীম (১৯)। আটককৃত রাজু ও তানহা বাসাবোর ওই বাসায় লিভটুগেদার করতো বলেও স্বীকার করেছে।
অপহৃত উজ্জ্বল নাগ বলেন, তিনি গাজীপুরের কোনাবাড়িতে গ্রীনল্যান্ড নামে একটি গার্মেন্ট কারখানায় ডিজিএম হিসেবে চাকরি করেন। কয়েক মাস আগে তানহা নামে এক তরুণীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এরপর থেকে তানহার সঙ্গে তার নিয়মিত ফোনে কথা হতো। তানহা তাকে নানা বলে ডাকতো। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় তানহা তাকে ফোন করে তার শিশু বাচ্চা ভীষণ অসুস্থ বলে জানায়। তাকে একবার তার বাসায় গিয়ে শিশুটিকে ডাক্তার দেখাতে সহযোগিতা করতে বলে। সন্ধ্যার দিকে উজ্জ্বল নাগ ফলমূল নিয়ে বাসাবোর ৬ নম্বর কদমতলার ষষ্ঠ তলায় তানহার বাসায় যান। বাসার ভেতরে ঢুকেই বুঝতে পারেন তিনি ভুল করে ফেলেছেন। তানহার মন ভোলানো আহ্বানে সাড়া দিতে গিয়ে ফাঁদে পড়েছেন। উজ্জ্বল নাগ বলেন, ওই বাসায় ঢোকার পরপরই কয়েকজন যুবক তার হাত বেঁধে ফেলে। মুখে স্কচটেপ আটকিয়ে প্রথমে তাকে পেটানো হয়। পরে তার কাছে ৩০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। তিনি এত টাকা দেয়ার সামর্থ্য নেই জানালে দেন-দরবার করে শেষে ১০ লাখ টাকায় রাজি হয়। তানহা ও তার সহযোগীরা তার পকেট থেকে এটিএম কার্ড ও পিন নম্বর নিয়ে যায়। কিন্তু ওই একাউন্টে কোন টাকা ছিল না। রাতেই তারা স্ত্রী মল্লিকা বিশ্বাসকে ফোন করে মিথ্যা বলতে বলে। তাদের শেখানো মতে তিনি স্ত্রীকে ফোন দিয়ে এক বন্ধুর বাসায় পার্টিতে আছেন বলে জানান। একেবারে সকালে ফিরবেন বলে স্ত্রীকে কোন চিন্তা করতেও নিষেধ করেন। উজ্জ্বল নাগ বলেন, আমার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে এসব আমাকে বলতে বাধ্য করা হয়েছে। রাত দুইটার দিকে আমাকে গার্মেন্ট মালিক জুলফিকার সাহেবকে ফোন করতে বলে। ওরা শিখিয়ে দেয় ‘মা অসুস্থ, হার্ট ও কিডনি নষ্ট হয়েছে। এ্যাপোলোতে ভর্তি। জরুরি ১০ লাখ টাকা লাগবে, মাদ্রাজ নিয়ে যাবো’ বলার জন্য। তাদের কথামতো কাজ করি। এমডি স্যার সকালে টাকার ব্যবস্থা করে দেবেন বলে জানান। সারা রাত আমাকে বসিয়ে রাখা হয়। পরদিন এমডি বাদ দিয়ে অন্য কোন বন্ধুর কাছ থেকে টাকা নিয়ে দিতে বলে। পরে অপু ও ইমনের সঙ্গে কথা বলি। ওদের সঙ্গেও একই কথা বলি। ওরাও টাকা দেয়ার আশ্বাস দেয়। কিন্তু এদিকে ওরা আমাকে নির্যাতন করতে থাকে। পরে জাহাঙ্গীর নামে আরেকজনকে ফোন দেই। সে প্রাথমিকভাবে ৪০ হাজার টাকা দিতে রাজি হয়। শনিবার সন্ধ্যায় ওদের শেখানো কথামতো খিলক্ষেতে আমার এক মাসতুতো বোন যাবে। ওর নাম শৈলী। পরে তানহা নিজে শৈলী সেজে রাজুকে সঙ্গে নিয়ে জাহাঙ্গীরের অফিস পিয়ন বিশ্বজিতের কাছ থেকে ওই টাকা নিয়ে আসে। পরদিন তাকে এমন কাউকে ফোন করতে বলা হয় যাকে অফিস কিংবা পরিবারের কাউকে চেনে না। পরে তিনি কৌশলে তার নিজ অফিসের ম্যানেজার কো-অর্ডিনেশন বাদল রায়কে ফোন দেন। বাদল রায় পাঁচ লাখ টাকা দিতে চায়। গতকাল সন্ধ্যায় বাদল রায়ের কাছে টাকা আনতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে তানহা। পরে পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে। একই সঙ্গে বাসায় থাকা অন্যদের আটক করে।
এদিকে তানহা জানায়, তার আগে একটি বিয়ে হয়েছিল। ওই স্বামী তাকে বাচ্চাসহ ফেলে গেছে। এরপর থেকে সে দেহব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। উত্তরার তিন নম্বর সেক্টরের ১০ নম্বর রোডের একটি ফ্ল্যাটে সে নিয়মিত যেত। সেখানেই বিভিন্ন ক্লায়েন্টের সঙ্গে সে অর্থের বিনিময়ে দৈহিক মেলামেশা করতো। ওই ফ্ল্যাটেই উজ্জ্বল নাগের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এরপর উজ্জ্বল নাগ তাকে আলাদা ফ্ল্যাটে রাখার জন্য চুক্তি করেন। ছয় মাসে ছয় লাখ টাকা দেয়ার কথা ছিল তার। এগার হাজার টাকায় ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেয়া হয়। তানহা বলে, ফ্ল্যাটে আমার সঙ্গে বয়ফ্রেন্ড রাজু থাকত। আমরা লিভটুগেদার করতাম। আর মাসে ৪-৫ বার উজ্জ্বল নাগ বাসায় আসতো। এছাড়া, মাঝে মধ্যেই সে আমাকে বিভিন্ন বায়ারের কাছে নিয়ে গেছে। কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী আমার টাকা দেয়নি। তাই আমি কৌশলে তাকে ডেকে এনে আটকে রেখে টাকা আদায়ের চেষ্টা করেছিলাম। তানহার বয়ফ্রেন্ড রাজু জানায়, এয়ারপোর্টের একটি অফিসে কাজ করার সময় তানহার সঙ্গে তার পরিচয়। এরপর তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। আমরা একসঙ্গে থাকতাম। আমি জানি ও কী করে। ও ভালো হতে চেয়েছিল। এ জন্য আমি ওকে সঙ্গ দিতাম। উজ্জ্বল নাগকে ওর পরিকল্পনায় আটক করি। ৪০ হাজার টাকা নিয়েছিলাম। কিন্তু বাকি টাকা নেয়ার আগেই পুলিশ আমাদের ধরে ফেলে।
এদিকে র‌্যাব-১ এর একটি দল গতকাল বারিধারার ডিওএইচএসের ৭ নম্বর লেনের ৪৪৮ নম্বর অ্যাপার্টমেন্টের তৃতীয় তলায় অভিযান চালিয়ে বার জনকে আটক করেছে। তারাও বিভিন্ন গার্মেন্ট মালিকসহ ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদেরকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ওই বাসায় ডেকে আনতো। পরে অফিসে থাকা মহিলাদের সঙ্গে অবৈধ মেলামেশা করার সুযোগ করে দিতো। কৌশলে এসব দৃশ্য ভিডিও করা হতো। পরে আপত্তিকর অবস্থার সেই ভিডিও দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করা হতো। আদায় করা হতো বিপুল অর্থ। কখনো কখনো অবৈধ অস্ত্র দেখিয়ে শারীরিক ভাবে নির্যাতন এবং সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রেখেও টাকা আদায় করতো তারা। ওই বাসা থেকে আটককৃতরা হলো- ওমর ফারুক (২০), আল ইমরান হোসেন (২৪), আতিকুর রহমান রায়হান (২৫), নিহার রঞ্জন দাস (২৫), মোন্তাছের রহমান রাজীব (২৩), তুহিন হোসেন (১৮), সাখাওয়াত হোসেন (৩৩), আনোয়ার হোসেন (৩৪), আল আমীন হোসেন (১৭), আইযুব আলী (৩৫), মঈনুল ইসলাম (২২) ও মোস্তফা (৩১)। র‌্যাব কর্মকর্তারা জানান, ওয়াজিবুল্লাহ মিলন প্রকাশ ওরফে তপু (৩৩) ও রিসাদ প্রকাশ ডিটাস (২৮) নামে দুই যুবক পালিয়ে গেছে। তারাই হলো এই অফিসের মালিক ও মূল হোতা। আটককৃতরা তাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করতো। ওই অফিস থেকে ৩৮টি ব্ল্যাংক কার্টিজ পেপার, ১৫টি পাসপোর্ট, ১টি মোটরসাইকেল, ২ বোতল ফেনসিডিল, ১টি ম্যাগাজিন ও ১টি মেটাল ডিটেক্টর উদ্ধার করা হয়। র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক এটিএম হাবিবুর রহমান বলেন, বায়িং হাউজের আড়ালে তারা এই ব্ল্যাকমেইলিং করতো। তাদের টার্গেট ছিল সমাজের বিত্তশালীরা। বিশেষ কারে গার্মেন্ট সেক্টরের বড় কর্মকর্তাদের তারা অফিসে নিয়ে নারীঘটিত ব্যাপারে ব্ল্যাকমেইল করতো। আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
ঘরে বসেই ই-সেবা, তথ্য কেন্দ্রে ভিড় ॥ দারুণ খুশি কৃষক

ঘরে বসেই ই-সেবা, তথ্য কেন্দ্রে ভিড় ॥ দারুণ খুশি কৃষক

পঞ্চগড়ে ডিজিটাল কার্যক্রমে ব্যাপক গাড়া
এ রহমান মুকুল
দুই হাজার একুশ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে চলমান ডিজিটাল কর্মসূচী পঞ্চগড় জেলায় পুরোদমে চলছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় দ্রুত সরকারী সেবা পৌঁছে দেয়া এবং তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ ব্যবহার নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে জেলার ৪৩ ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্র। এসব কেন্দ্রের মাধ্যমে কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইন, বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, পাসপোর্ট, বিদেশ গমন ও মানবাধিকার বিষয়ক তথ্য, সরকারী ই-সেবা এবং জেলা প্রশাসক অফিস থেকে ন্যাশনাল ই সার্ভিস সিস্টেম (নেস) পেপারলেস সেবা দেয়া হচ্ছে। ডিজিটাল কার্যক্রম শুরু হওয়ায় স্বল্প সময়ের মধ্যে অতি সহজে গ্রামের সাধারণ মানুষ বাড়িতে বসে সরকারী নানা সেবা পাচ্ছেন। এসব সেবা পেতে কোন হয়রানির শিকার বা দালালদের শরণাপন্ন এবং অতিরিক্ত কোন টাকাও খরচ করতে হচ্ছে না। ফলে সরকারী নানা সেবা পেতে গ্রামের মানুষ প্রতিদিন ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্রে ভিড় করছে। এ ছাড়াও জেলা প্রশাসক অফিসের প্রত্যেকটি বিভাগ ন্যাশনাল ই সার্ভিসের আওতায় আসায় কর্মকর্তাদের টেবিলে আগের মতো আর ফাইলের স্তূপ জমে থাকছে না। যে কোন বিষয়ের ফাইলে তাৎক্ষণিক মতামত দিয়ে বা স্বাক্ষর করে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। এতদিন যে কাজটি করতে ৩ থেকে ৭ দিন কিংবা কোন কোন ক্ষেত্রে ১৫ দিন লাগত সেই কাজটি এখন এক দিনেই শেষ করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসক বা কোন কর্মকর্তা অফিসের বাইরে থাকলেও তিনি অনলাইনে জনগুরুত্বপূর্ণ ফাইল দেখে নিচ্ছেন এবং মতামত দিয়ে তাৎক্ষণিক অধস্তন কর্মকর্তাদের কাছে প্রেরণ করছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় এবং ইউএনডিপির সহযোগিতায় এ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্পের আওতায় পরিচালিত ডিজিটাল কার্যক্রম ইতোমধ্যে পঞ্চগড়ের সর্বস্তরের মানুষের মাঝে ব্যাপকভাবে সাড়া ফেলে দেয়ায় অতি দ্রুতই পাল্টে যাচ্ছে পঞ্চগড়ের চিত্র। তাই এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে পঞ্চগড় জেলা তার কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জনের শেষ প্রান্তে। বর্তমানে জেলা প্রশাসক অফিসের সকল সেক্টরে ডিজিটাল কার্যক্রম দ্রুত বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে কম্পিউটার ল্যাব ও ই-সেবা কেন্দ্র এবং জেলা আইসিটি কেন্দ্র ছাড়াও একটি সার্ভার স্টেশনও স্থাপন করা হয়েছে, যা সরাসরি জাতীয় সার্ভার স্টেশনের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে ডিজিটাল কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। জেলা প্রশাসক অফিসের ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে দৈনন্দিন জনগুরুত্ব সম্পন্ন কার্যক্রম প্রদর্শন ছাড়াও ইতিহাস-ঐতিহ্য তুলে ধরা হচ্ছে। এক্ষেত্রে পঞ্চগড় জেলা দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে প্রথমস্থান অধিকার করেছে। এ ছাড়াও প্রতিবছর ৩ দিনব্যাপী ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা আয়োজনের মাধ্যমে ডিজিটাল প্রযুক্তি সম্পর্কে সাধারণ জনগণকে অবহিত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কৃষক তার ফসলের ক্ষেত পোকামাকড়ের হাত থেকে রক্ষায় কৃষি কর্মকর্তার কাছে ধরনা না দিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্র থেকে অতি সহজে প্রয়োজনীয় তথ্য পাচ্ছেন। জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার একজন কৃষক বাড়িতে বসে মোবাইল মেসেজের মাধ্যমে আখ সরবরাহের পুঁজি পেয়ে যাচ্ছেন। শুধু জমির কম্পিউটারাইজট খতিয়ানের জবেদা নকল আর আখের পুঁজিই নয়, জেলার প্রত্যন্ত এলাকার সব শ্রেণী-পেশার মানুষ এখন হাতের কাছেই তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য এবং সরকারী সেবাসমূহ পাচ্ছেন।
প্রত্যন্ত গ্রামের অশিক্ষিত একজন কৃষকও জানে কিভাবে এবং কোথায় গেলে ফরম, জমির পর্চা, খতিয়ানের জাবেদা নকল, জমির নক্সা, ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার জন্য স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ফরম, অল্প খরচে বিদেশে কথা বলা, কৃষি তথ্যসেবাসহ সরকারী নানা সেবা পাওয়া যায়। এ প্রসঙ্গে বাংলাবান্ধা ইউপি চেয়ারম্যান কুদরত-ই-খুদা মিলন জানালেন, আগে জমির খতিয়ানের জবেদা নকল পেতে ১৫ থেকে ২০ দিন আবারও কোন কোন ক্ষেত্রে এক মাসেরও বেশি সময় লাগত। অথচ সেই জবেদা নকল উঠাতে ৩ থেকে ৫ দিনের বেশি সময় লাগছে না। তাও আবার বাড়িতে বসেই পাওয়া যাচ্ছে। দেবীগঞ্জ উপজেলার মধ্য শিকারপুর গ্রামের কৃষক হাফিজুর গম ক্ষেত পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষায় প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে শালডাঙ্গা ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্রের উদ্যোক্তার কাছে কীটনাশক ব্যবস্থাপনায় তথ্য পাওয়ায় সঠিক সময়ে ব্যবস্থা নেয়ায় পোকার আক্রমণ থেকে গম ক্ষেতকে রক্ষা করতে পেরেছেন। বাড়ির কাছে চিলাহাটী ইউনিয়ন পরিষদে অবস্থিত তথ্যসেবা কেন্দ্র থেকে বোরো ধানের বীজতলা তৈরি, জমিতে চারা রোপণ, সেচ, পরিচর্যাসহ সার-কীটনাশক প্রয়োগ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্যসেবা পাওয়ায় ভাউলাগঞ্জের অনেক কৃষকই এবার ব্যাপক জমিতে বোরো রোপণ করেন। সঠিক সময়ে বোরো ক্ষেতের পরিচর্যা করায় বাম্পার ফলনেরও আশা করছেন তারা।
সরকারী কোন অর্থ সাহায্য ছাড়াই স্থানীয় সম্পদ এবং উদ্যোগকে কাজে লাগিয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলার মাধ্যমিক স্তরের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইন্টারনেট মডেম এবং যেসব প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার নেই সেসব প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার সরবরাহ করে কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়াও বেকার শিক্ষিত যুবক-যুবতী ও তরুণ প্রজন্মকে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির আওতায় আনতে তাদের নিয়মিত বিনামূল্যে কম্পিউটার ও ইন্টারনেট চালানোর ওপর প্রশিক্ষণ প্রদান চলমান রয়েছে। আর এই প্রশিক্ষণের ফলে প্রত্যন্ত গ্রামের একজন মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষার্থীও জানে কিভাবে ইন্টারনেট ব্রাউজিং করতে হয়। আটোয়ারী উপজেলার সীমান্ত ঘেঁষা গ্রাম বর্ষালুপাড়ার কলেজছাত্রী সবিতা রানী ছুটির দিনগুলোতে পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্রে গিয়ে ইন্টারনেট ব্রাউজিং করে এবং সামাজিক ওয়েব সাইট ফেসবুকে বন্ধুদের সঙ্গে ভাব বিনিময় করে বেশ ভালই অবসর সময় কাটাচ্ছেন। তেলিপাড়া গ্রামের শিক্ষিত বেকার যুবক ডালিম বেশ স্বাবলম্বী। ইন্টারনেট ও কম্পিউটারের ওপর প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে এখন ধুলাঝাড়ি বাজারে একটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খুলেছেন। এলাকার বেকার যুবকদের কম্পিউটার, ইন্টারনেটের ওপর প্রশিক্ষণ ছাড়াও কৃষকদের চাষাবাদসহ বিভিন্ন রোগবালাইয়ের হাত থেকে ফসলকে রক্ষায় পরামর্শ প্রদান করে আসার পাশাপাশি গ্রামে প্রজেক্টরের মাধ্যমে বিনোদনমূলক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান প্রচার করে সচ্ছলভাবে সংসার চালাচ্ছেন।
ভুটান থেকে সাড়ে ৩ হাজার মে.ওয়াট বিদ্যুত আনা হচ্ছে

ভুটান থেকে সাড়ে ৩ হাজার মে.ওয়াট বিদ্যুত আনা হচ্ছে


এম শাহজাহান ॥ ভুটান থেকে সাড়ে ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানির আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দিবে সরকার। উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে এই বিদ্যুত আমদানি করা হবে। প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সহযোগিতায় ভুটান বর্তমানে ১০টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এই প্রকল্পের বিদ্যুত উৎপাদনের ক্ষমতা প্রায় ৬ হাজার ৩শ’ মেগাওয়াট। ইতোমধ্যে বিদ্যুত বিভাগ ভুটান থেকে বিদ্যুত আমদানির সম্ভাবনার বিষয়টি আলোচনা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছে। তাতে ভুটানের সঙ্গে বিদ্যুত খাতে সহযোগিতার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সুপারিশ করা হয়েছে। ভুটানের থিম্পুতে বাংলাদেশ-ভুটানের বাণিজ্য সচিব পর্যায়ে আগামীকাল বুধবারের বৈঠকেই এ সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য। জানা গেছে, ৯ ও ১০ এপ্রিল বাংলাদেশ-ভুটানের বাণিজ্য সচিব পর্যায়ে দু’দিনব্যাপী বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এই বৈঠকে বিদ্যুত আমদানির পাশাপাশি ট্রানজিট, শুল্কমুক্ত সুবিধায় রফতানি বাণিজ্য সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা করা হবে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ থেকে ৮ সদস্যের একটি উচ্চপর্যাযের সরকারী প্রতিনিধি দল আজ মঙ্গলবার ভুটানের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন।
সচিব পর্যায়ের বৈঠকে দু’দেশের মধ্যে ট্রানজিট চুক্তির খসড়া অনুমোদনসহ নৌরুট চালু এবং বৈদেশিক বাণিজ্যে অর্থ আদান-প্রদানে জটিলতা নিরসন, শুল্কমুক্ত ১৮টি পণ্যের তালিকা সংশোধন, ভুটান কর্তৃক কতিপয় বাংলাদেশী পণ্যের ওপর শুল্কমুক্ত করার নোটিফিকেশন, বাংলাদেশী ফ্রুট জুস রফতানিতে জটিলতা নিরসনে ভুটানের এইচ এস কোডের বর্ণনা সংশোধন, নকুগাঁও ও হালুয়াঘাটকে স্থল কাস্টসম স্টেশন ঘোষণা, বৈদেশিক বাণিজ্যের অর্থ পরিশোধের প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা জোরদারকরণ, ভুটানে ব্যবসায়ী ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি, বাংলাদেশে ভুটানের ১৭টি পণ্য শুল্কমুক্ত সুবিধায় প্রবেশের অনুরোধ, উভয় দেশের শুল্ক কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন, শুল্কমুক্ত ১৮টি পণ্যের ওপর আরোপিত এ্যাডভান্স ট্রেড ভ্যাট প্রত্যাহার, বাংলাদেশের মেরিন একাডেমিতে ভুটানের শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার প্রস্তাব বিষয়ে আলোচনা করা হবে।
এ ছাড়া বিনিয়োগ সুবিধা সংক্রান্ত তথ্য বিনিময়, বেসরকারী খাতে সহযোগিতা, সিমেন্ট ইনস্যুলেটর এবং গ্লাসশীট রফতানি ও পর্যটন খাতে সহায়তা নিয়ে আলোচনা করা হবে সচিব পর্যায়ের বৈঠকে। এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শওকত আলী ওয়ারেছী জনকণ্ঠকে বলেন, নতুন ইস্যু হিসেবে বিদ্যুত আমদানি, ট্রানজিটের খসড়া অনুমোদনের বিষয় অগ্রাধিকার দেয়া হবে। তিনি বলেন, ভুটান থেকে বিদ্যুত আমদানির বিষয়টি নতুন নয়। বাংলাদেশে প্রতিবছর ১১-১২ ভাগ বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশের বিদ্যুত খাতের মাস্টারপ্লানে উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে ভুটান থেকে সাড়ে ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আর তাই বিদ্যুত আমদানির বিষয়টি এবারে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ভুটান ১৭টি পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা চেয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ট্যারিফ কমিশন ৬ পণ্যের সুবিধা দেয়ার বিষয়ে মত দিয়েছে। আগামীকালের বৈঠকে বিষয়গুলো উপস্থাপন করা হবে। বৈঠকে উপস্থাপনের জন্য কার্যপত্র তৈরি করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এতে বিনিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য বিনিময় ও ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
১৮ কিশোরকে দেশে পাঠালো ভারত

১৮ কিশোরকে দেশে পাঠালো ভারত

দুই বছর সাজা শেষে বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে দেশে ফিরেছে ১৮ কিশোর। সোমবার রাতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এ কিশোরদের বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি'র) কাছে হস্তান্তর করে। এরা হল, হারুন-অর-রশিদ (১৭), বাবু মণ্ডল (১৩), নয়ন হোসেন (১৩), সবুজ হোসেন (১৫), জসিম হাওলাদার (১৮), আব্দুল গফফার (১৪), আব্দুর রহমান (১১), খোরশেদ আলম (১৯), মামুনুর রশিদ (১৮), মিলন শেখ (১৭), আল-আমিন (১৬), রাকেশ (১৪), মইনুর রহমান (১৫), সুমন হোসেন (১৪), বিজয় বিশ্বাস (১৩), অমিতোষ (১৪), আলী হোসেন (১৯) ও শাহরিয়ার দিপু (১৩)। ১৮ কিশোর খুলনা, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, সাতক্ষীরা ও ঝিনাইদহ জেলার বাসিন্দা।

জানা যায়, কলকাতা শহরে গিয়ে কাজের সন্ধানে ঘোরাঘুরির সময় পুলিশের হাতে আটক হন ওই ১৮ কিশোর। পরে অনুপ্রবেশের অভিযোগে দেশটির আদালত তাদের দুই বছর কারাদণ্ড দেয়। সাজা শেষে দক্ষিণাশ্বরের 'দুর্বাশ্রম' শেল্টার হোমে তাদের রাখা হয়। সেখান থেকে তাদেরকে ভারত সরকারের দেয়া বিশেষ পাশের মাধ্যমে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ জানায়, ভাল চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন সময় দালালরা অবৈধ পথে এদেরকে ভারতে পাচার করেছিল।
যৌন মিলনে নারীর কিছু কষ্টদায়ক সমস্যা ও সমাধান !

যৌন মিলনে নারীর কিছু কষ্টদায়ক সমস্যা ও সমাধান !

মেয়েরা স্বাভাবিক ভাবেই অনেক লাজুক। তাদের ছোট ছোট সমস্যাই শেয়ার করতে পারে না আর যৌন সমস্যা হলে তো কথাই নেই। মেয়েদের এমন কিছু কষ্টের কথা নিয়েই সাজিয়েছি আজকের ছোট প্রবন্ধ।বিবাহিত মহিলা ও যারা বিয়ের পায়তারা করছেন তাদের জন্য এটি বিশেষ উপকারী হবে বলেই মনে করছি। কিছু গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার ব্যাপারে আলোকপাত করা হয়েছে, সমস্যা গুলোকে হালকা দৃষ্টিতে না দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়াই সমীচীন হবে।
০১. যৌন চাহিদা হওয়ার পরেও লুব্রিকেশনের অভাবঃ
কারণঃঅনেকেরই যৌন চাহিদা হওয়া সত্ত্বেও যৌন স্থান ভিজে না। পানিশূন্যতা, বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ( কাউন্টার এন্টিহিস্টামিন), নার্সিং, মেনোপজের সময় হরমোন লেভেল পরিবর্তন এর উল্লেখযোগ্য কারণ।
চিকিৎসাঃপিচ্ছিল কারক পদার্থ ব্যবহার করতে হবে, পানি জাতীয় ব্যবহার করলে ভালো, কারণ কনডম এর জন্যে নিরাপদ। কিন্তু কেউ যদি তৈলাক্ত পিচ্ছিল কারক ব্যবহার করে তখন এটি কনডমের স্থিতিস্থাপকতা নষ্ট করে দিতে পারে। রঙ দেয়া, সেন্ট দেয়া ও ফ্লেভার জাতীয় লুব্রিকেন্ট ব্যবহার করা যাবে না। কারণ তা ইস্ট ইনফেকশন করে শুকনা ভাব আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। অনেকের প্রশ্ন হতে পারে, ইস্ট ইনফেকশন কি তার পুরুষ সঙ্গীর শরীরেও ইনফেকশন করতে পারে? উত্তর হবে হ্যাঁ । এটি অনেক কমই হয়, কিন্তু হয়। একই রকম লক্ষণ যেমন- লাল হয়ে যাওয়া, চুলকানি, যৌনমিলনের পর অস্বাভাবিক নিঃসরণ হতে পারে। কোন পুরুষের যদি ডায়াবেটিস থাকে, এন্টিবায়োটিক নিতে থাকে অথবা সে তার যদি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কোন কারণে কমে যায় তখন তার আক্রান্ত হওয়ার ঝুকি বেড়ে যায়। খৎনা করা না থাকলেও এর ঝুকি বেড়ে যায়। কারণ এর উপরের চামড়া ভেজা ভেজা অবস্থার সৃষ্টি করে যা ইস্ট বেড়ে ওঠায় সাহায্য করে।
০২. মিশনারি (পুরুষ উপরে থাকা ) পজিশনে যৌন মিলনে সমস্যা হওয়াঃশতকরা ২০ ভাগ মহিলার জরায়ু নরমালের উল্টো দিকে থাকতে পারে অর্থাৎ পেটের দিকে না থকে শিরদাঁড়ার দিকে থাকেতে পারে। এ ক্ষেত্রে টেম্পুন বা ডায়াফ্রাম ব্যবহার করা কষ্টকর হয় কারণ তা জরায়ুর ভেতর পর্যন্ত চলে যেতে পারে। তাই নারী উপরে থেকে মিলনে কষ্ট লাঘব হবে। আর মা হতে চাইলে যৌন মিলনের পর পেটের উপর অর্থাৎ উপুড় হয়ে কিছুক্ষণ শুয়ে থাকলে তা স্পার্ম কে সাঁতরে জরায়ুমুখে যেতে সাহায্য করবে।
০৩. যৌন চাহিদা কমে যাওয়াঃমেনোপজের কাছাকাছি বয়সের মহিলাদের এটি একটি উল্লেখযোগ্য সমস্যা। মেনোপজের আগে ইস্ট্রোজেন হরমোন লেভেল কমে যায়। লুব্রিকেশনের অভাবে ব্যথা ও ব্যথা থেকে আগ্রহ কমে যাওয়া এর প্রধান কারণ। চিকিৎসাঃ হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি , ইস্ট্রোজেন ক্রিম ও সাপোজিটরি আর লুব্রিকেন্ট (পিচ্ছিল কারক ) কাজ দিতে পারে।
০৪. যৌন মিলনের পর প্রস্রাবে জ্বালাপোড়াঃ
কারণঃচাপে ঘষা লেগে মূত্রনালিতে ইরিটেশন হলে জ্বালাপোড়া হতে পারে। দীর্ঘক্ষণ মিলন আর যৌন স্থানের শুষ্ক ভাবও এর গুরুত্বপূর্ণ কারণ। প্রস্রাব নালীতে ইনফেকশন হলেও এই সমস্যা হতে পারে। যদি প্রস্রাব যৌন স্থানে লাগার পর জ্বালাপোড়া হয় তবে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। মুত্রথলি খালি হওয়ার সাথে সাথে ব্যথা বাড়তে থাকলে মুত্রথলি ইনফেকশনের ব্যাপারেই সন্দেহ বেড়ে যায়।
চিকিৎসাঃযৌন মিলনের পর বাথ টাব ভর্তি কুসুম গরম পানিতে বসে থাকলে ব্যথা কমতে পারে। তাছাড়া পিচ্ছিল কারক ব্যবহারেও মাঝে মাঝে উপকার পাওয়া যেতে পারে। যদি এসব কিছুতেই লাভ না হয় তবে ডাক্তার দেখাতে হবে কারণ তখন কারণটা ইনফেকশনের দিকেই বেশি ইঙ্গিত করে। পানি বেশি পান করলে পিচ্ছিলতা ও ইনফেকশন থেকে মুক্তি দুইটা জিনিসেই উপকার পাওয়া যায়।
০৫. যৌনমিলনের পর তীব্র দুর্গন্ধ ও চুলকানিঃকারণঃ ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে এমন হতে পারে। নতুন বা একাধিক মিলন সঙ্গীর কারণে এমন হতে পারে। যৌন স্থানের ভেতরে কিছু দেয়া থাকলে ( যেমন চিকিৎসার জন্যে বা রোগ নির্ণয়ে কোন কিছু ব্যবহার করা হলে ) তা থেকেও হতে পারে। এর পাশাপাশি ইনফেকশনের আরও কিছু লক্ষণ থাকতে পারে যেমন অস্বাভাবিক নিঃসরণ, জ্বালাপোড়া। চিকিৎসা না করা হলে ডেট এর আগেই ডেলিভারি হওয়া, স্বল্প ওজনের বাচ্চা জন্ম নিতে পারে।
চিকিৎসাঃএন্টিবায়োটিক, যেমন- মেট্রোনিডাজল বা ক্লিন্ডামাইসিন ব্যবহারে লাভ হতে পারে। যাদের বাচ্চার জন্মকালীন ওজন কম বা যাদের ডেট এর পূর্বেই সন্তান জন্ম নিয়েছে তাদের স্ক্রিনিং করাতে হবে। শেষ করার আগে একটা ছোট্ট টিপস দিতে চাই। অনেকেই মনে করেন পিল খেলে মোটা হওয়ার ঝুকি বেড়ে যায়। দীর্ঘ দিন ব্যবহারের জন্যে পিলের উপরে কিছু নেই। আর নতুন বাজারে আসা পিল গুলোর সাইড ইফেক্ট-ও কম। কনডম ছিড়ে গিয়ে লিক করতে পারে। সেইফ পিরিয়ড মেনে যৌন মিলন শুধু রেগুলার পিরিয়ড হওয়া মেয়েদের জন্যেই কার্যকরী। তাও সেইফ থেকে ঠিক আনসেইফ পিরিয়ড হওয়ার সময়-ও ভুলবশত গর্ভধারণ হয়ে যেতে পারে কারণ এতটা হিসেব মেনে সেইফ আনসেইফ বের করা সম্ভব হয় না  আর জরায়ুর ভেতরে জন্মনিয়ন্ত্রক ডিভাইস রেখে দিলে তার সাইড ইফেক্ট এর তো শেষ নেই। তাই সিদ্ধান্ত আপনার। নিরাপদ থাকুন।
উইন্ডোজের আপডেট ৮ এপ্রিল

উইন্ডোজের আপডেট ৮ এপ্রিল

উইন্ডোজ ৮.১ অপারেটিং সিস্টেমের আপডেট ৮ এপ্রিল থেকে পাওয়া যাবে। ইন্টারনেট ব্রাউজিং অভিজ্ঞতাকে আরও উন্নত করার লক্ষ্য নিয়ে এই নতুন আপডেট উন্মুক্ত করা হচ্ছে বলেই দাবি করেছে বিশ্বের বৃহত্তম সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

৮ এপ্রিল থেকে উইন্ডোজ ৮.১ ও উইন্ডোজ আরটি ৮.১ ব্যবহারকারীরা বিনা মূল্যে এই আপডেট পাবেন। আপডেট সংস্করণটিতে স্টার্ট বাটন ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি বেশ কিছু উন্নত ফিচার আনার কথা জানিয়েছে মাইক্রোসফট। টাচ ইন্টারফেসের সুবিধার্থে উইন্ডোজ ৮ উন্মুক্ত করার সময় স্টার্ট বাটনটি সরিয়ে ফেলেছিল মাইক্রোসফট। তবে উইন্ডোজ ব্যবহারকারীরা স্টার্ট বাটন সরিয়ে ফেলার পর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন।

সম্প্রতি মাইক্রোসফট আয়োজিত বিল্ড নামের ডেভেলপার সম্মেলনে মাইক্রোসফটের কর্মকর্তা ব্র্যান্ডন লেব্ল্যাঙ্ক বলেন, ‘উইন্ডোজে নতুন অভিজ্ঞতার জন্য আমরা নতুন আপডেট আনছি। আপডেট সংস্করণটিতে ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্টের ছবির পাশে পাওয়ার ও স্টার্ট বাটন পাবেন। এখন দ্রুত পিসি বন্ধ করা ও সার্চ করার সুবিধাও পাবেন। ডেস্কটপ ব্যবহারকারীরা এখন ডিফল্ট সেটিংস হিসেবে ডেস্কটপ বুট অপশন পাবেন। এ ছাড়াও টাস্কবারে ডেস্কটপ ও উইন্ডোজ স্টোরের অ্যাপস ও প্রিয় ওয়েবসাইটগুলো পিন করে রাখা যাবে। এ ছাড়া ব্রাউজার নিয়ন্ত্রণে বিশেষ সুবিধা পাবেন ব্যবহারকারী।’

মাইক্রোসফট দাবি করেছে, তাদের উইন্ডোজ ৮.১ আপডেটের মাধ্যমে হার্ডওয়্যার অংশীদাররা কম খরচে পণ্য তৈরির সুবিধা পাবেন।